সকালে BJP, দুপুরে TMC! দিনভর নাটক

সকালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপির পার্টি অফিসে যোগদান করলেন তৃণমূলের ৩ পঞ্চায়েত সদস্য। কিছুক্ষণের মধ্যেই দলীয় রঙ পাল্টে ফেললেন তাঁরা। দিনভর নাটকীয় চিত্র।

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
manidaho

নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: সকালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপির পার্টি অফিসে যোগদান করেন তৃণমূলের ৩ পঞ্চায়েত সদস্য। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই ভোলবদল করে তৃণমূলের হয়েই বোর্ড গঠনে অংশ নিলেন তাঁরা। দিনভর এই নাটকীয় চিত্র দেখা গেল মেদিনীপুর সদর ব্লকের মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতে। সকাল থেকে উত্তেজনা ছিল এলাকায়। মোতায়েন ছিল গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ।

মণিদহ পঞ্চায়েতে ১৭টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১০টি ও বিজেপি ৭টিতে জয়লাভ করে। প্রধানের আসন সংরক্ষিত রয়েছে। এই নিয়ে বৈঠকও হয়েছে তৃণমূলের অঞ্চল নেতৃত্বের মধ্যে। সেখানে সিপিএমের প্রাক্তন প্রধান তথা বর্তমান তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য কানাই হেমরমের নাম প্রধান হওয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয়। ফলে দ্বিতীয়বার প্রধান হওয়ার আশাও জেগে ছিল প্রাক্তন সিপিএমের প্রধান কানাইবাবুর। কিন্তু বোর্ড গঠনের চব্বিশ ঘন্টা আগে দলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কথা জানতে পেরে তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল শুরু হয়। 

অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে কানাই হেমরম, স্বপন দাস, শকুন্তলা দোলই তৃণমূলের ৩ পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপিতে যোগদান করেন। যোগ দিয়ে কানাই বাবু জানিয়েছেন, 'দলে মর্যাদা নেই, দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই কেন্দ্র সরকারের উন্নয়নে সামিল হতে বিজেপিতে যোগদান করেছি'। তিনি এও বলেন, 'বিজেপির বোর্ড গঠন হবে এবং তিনি প্রধান হবেন'। তার কয়েক ঘণ্টা পরই তৃণমূলের হয়ে সমর্থন করলেন ওই তিন পঞ্চায়েত সদস্য। যদিও বিজেপির অভিযোগ, তাদের জোর করে পুলিশ গাড়ি থেকে নামিয়ে তুলে নিয়ে গেছে। বিজেপির ব্লক সভাপতি সুজিত জানা বলেন, 'আমরা যখন মেদিনীপুর থেকে গাড়িতে করে বোর্ড গঠনে অংশ নেওয়ার জন্য আসছিলাম, সেই সময় কঙ্কাবতীতে পুলিশ আমাদের গাড়ি থামিয়ে স্বপন দাস এবং কানাই হেমরমকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে চলে যায় এবং শকুন্তলা দোলইকে চিনতে না পারায় সে আসতে পেরেছিল'। তবে শকুন্তলা বিজেপির সঙ্গে মিছিলে কিছুটা হাঁটার পরেই ভোল বদলে দেন। তিনি আর বিজেপির হয়ে বোর্ড গঠনে অংশ নিতে রাজি হয়নি। বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া দেরি হচ্ছে বলে বাইরে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি নেতা-কর্মীরা। পঞ্চায়েত অফিসের গেটে তালা লাগাতেও তারা উদ্যত হয়। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে ঠেলাঠেলি বেঁধে যায়। পরে পুলিশের গাড়িতে করে পঞ্চায়েত অফিসে পৌঁছয় বিজেপিতে যোগ দেওয়া তৃণমূলের দুই পঞ্চায়েত সদস্য। অবশেষে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। পঞ্চায়েত অফিস থেকে বেরোনোর সময় কানাই হেমরম বলেন, 'একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে'। পরে পুলিশের গাড়িতেই মেদিনীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান হয়েছেন তৃণমূলের জ্যোৎস্না হেমরম এবং উপপ্রধান নির্মল মাঝি। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি কঙ্কাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান হয়েছেন সুখেন্দু জানা, উপপ্রধান কবিতা সিং। চাঁদড়াতে প্রধান ফাল্গুনী দে, উপপ্রধান তারকনাথ বেরা। ধেড়ুয়াতে প্রধান জয়ন্তী চালক, উপপ্রধান কৌশিক মাহাত।