যাদবপুরের 'বাবা' সৌরভ ত্রাস নবাগতদের! কতটা প্রভাবশালী এই প্রাক্তন?

যাদবপুরে প্রথম বর্ষের ছাত্রের অকাল মৃত্যুর পর উঠে এসেছিল সবার প্রথমে একটা নাম- সৌরভ চৌধুরী। কলেজের এই প্রাক্তন নাকি সকলের কাছে বাবা ছিল। কতটা প্রভাবশালী ছিল সে?

author-image
Anusmita Bhattacharya
আপডেট করা হয়েছে
New Update
souravj

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় একদিকে ধৃতের সংখ্যা বাড়ছে আর সেইসঙ্গে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে যা জানলে চক্ষু চড়কগাছ হতে বাধ্য। সেখানে বারবার ঘুরেফিরে উঠে আসছে ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া প্রথম এবং মূল অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরীর নাম। বিশ্ববিদ্যালয় বা হস্টেলে সৌরভ যে কতটা প্রভাবশালী ছিল তা নিয়ে বহু ঘটনার কথা সামনে আসছে।

শোনা যাচ্ছে যে সৌরভের সঙ্গে একাধিক বিশিষ্টের যোগাযোগ ছিল। সেই অর্থে সৌরভকে প্রভাবশালী বলা যায়। জানা গিয়েছে যে হস্টেলে নতুন ছাত্ররা আসার পর সৌরভকে তাদের বাবা বলে ডাকতে বাধ্য করা হয়। এছাড়াও বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র তিন তলার বারান্দা থেকে নীচে পড়ে যাওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই সৌরভের নেতৃত্বে হস্টেলে সাধারণ বৈঠক অর্থাত্‍ জিবি বসানো হয়। সেখানে পুলিশকে কে কী বলবে সেগুলো সব শিখিয়ে দেওয়া হয় সৌরভের নেতৃত্বেই। এখানেই শেষ নয়, সৌরভের পাশাপাশি সিনিয়র ছাত্রদের হস্টেলে এতটাই দাপট ছিল যে খোদ হস্টেল সুপার বিল্ডিংয়ের উপরে উঠতে খুব একটা সাহস নাকি পেতেন না। ছাত্র পড়ে যাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ডিন অফ স্টুডেন্টস' রজত রায়কে ফোন করে এক আবাসিক ঘটনাটি জানিয়েছিলেন। জানা যায় যে এরপর রজত বিষয়টি হস্টেল সুপারকে জানান। কিন্তু হস্টেল সুপার উপরে উঠতে ভয় পেতেন বলে নাকি যাননি, এমনটাই জানাচ্ছে পুলিশ। এর পাশাপাশি নতুন আসা ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে হস্টেলে ঘরের ব্যবস্থা সৌরভ করে দিত বলেও পুলিশ জানাচ্ছে। হস্টেলে সৌরভ যে কতটা হোমরাচোমড়া হয়ে উঠেছিল এসব ঘটনাতেই তা স্পষ্ট।

এটা পরিষ্কার যে যাদবপুর মেন হস্টেলে বছরের পর বছর ধরে তাণ্ডব চালিয়ে এসেছে সিনিয়র ছাত্ররা। তাণ্ডব চালানোর সেই ব্যাটন বছরের পর বছর ধরে হাত বদল হয়ে চলেছে। গত কয়েক বছর ধরে সেই দায়িত্ব এসেছিল সৌরভসহ অন্যান্যদের কাছে। কিন্তু ধরা পড়ার পর সকলেই নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। শুরু হয়েছে একে অপরের দিকে দোষ দেওয়ার পালা। অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা করছে সব অভিযুক্তরাই। কিন্তু সেই চেষ্টা কাজে লাগছে না তাদের। তাই ধৃতদের আদালতে পেশ করে সরকারি আইনজীবীকে তাত্‍পর্যপূর্ণভাবে নাকি বলেছেন যে এরা সফল অপরাধী, কিন্তু ব্যর্থ অভিনেতা। অর্থাত্‍ নিজেদের বাঁচাতে গিয়ে যে সমস্ত কারসাজি ধৃতরা করছে তা ধরা পড়ে যাচ্ছে পুলিশের কাছে। এই পরিস্থিতিতে একটাই প্রশ্ন রয়েছে সবার যে এবার কি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে চিরতরে বন্ধ হবে Ragging নামক সামাজিক ব্যাধি? নাকি সবকিছু ধামাচাপা পড়ে গেলে হস্টেল আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবে? একমাত্র সময় আর তদন্তই এর উত্তর দেবে।