‘ম্যানমেড বিপর্যয়’, উত্তরবঙ্গ নিয়ে ফের একই তথ্য দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

প্রতিটি পরিবারকে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
mamata36

File Picture

নিজস্ব সংবাদদাতা: ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। দার্জিলিং, মিরিক ও কালিম্পঙে ধস, নদীর জলে প্লাবন, ভাঙা রাস্তা— সর্বত্র মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির ছবি। এই পরিস্থিতিতে সোমবার উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তার আগেই বিপর্যয়কে তিনি চিহ্নিত করলেন ‘ম্যানমেড’ বা ‘পরিকল্পিত বন্যা’ হিসেবে।

গত শনিবার থেকে লাগাতার বৃষ্টির জেরে রবিবার রাতে পাহাড়ে ধস নামে। দার্জিলিঙে ১৮ জন ও মিরিকে ৫ জন-সহ এখনও পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। নিহতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিটি পরিবারকে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। পাশাপাশি একজনকে স্পেশাল হোমগার্ড পদে চাকরি দেওয়া হবে।

Mamata

আবহবিদদের মতে, সোমবার উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হলেও নদীগুলি এখনও ফুঁসে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, সময়মতো ড্রেজিং না করা এবং ডিভিসির জলছাড়াই এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তাঁর কথায়, “ফরাক্কা বা হলদিয়া যদি সময় মতো ড্রেজিং করত, কিংবা ডিভিসি, মাইথন, পাঞ্চেতের পলি সরানো হত, তবে এমন বন্যা হতো না”।

এদিন তিনি আরও জানান, ভুটান ও সিকিম থেকে নেমে আসা জলের চাপও বন্যা পরিস্থিতি জটিল করেছে। “ডিভিসি নিজেদের বাঁচাতে ইচ্ছেমতো জল ছাড়ছে। ঝাড়খণ্ডকে বাঁচাচ্ছে, অথচ বাংলার একাধিক জেলা জলের তলায়”, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর।

বন্যায় আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “প্রায় ৫০০ জন পর্যটককে আজ নামিয়ে আনা হচ্ছে। যাঁরা এখনও পাহাড়ে রয়েছেন, তাঁদের হোটেল থেকে টাকা নিতে বারণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে সরকার খরচ বহন করবে”। ইতিমধ্যেই বহু পর্যটককে বাসে চাপিয়ে সমতলে আনা হয়েছে।

উদ্ধার কাজ জোরকদমে চলছে। ইতিমধ্যেই পুলিশের ডিজি পৌঁছে গিয়েছেন উত্তরবঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব এদিন প্রথমে হাসিমারাতে, তারপর নাগরাকাটায় এবং মঙ্গলবার মিরিকে যাবেন। অন্যদিকে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব ইতিমধ্যেই ধূপগুড়ির দুর্গত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন।

উত্তরবঙ্গের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে রাজনীতি চড়েছে চরমে। তবে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন— এই দুর্যোগ শুধুমাত্র প্রাকৃতিক নয়, প্রশাসনিক ব্যর্থতার ফলও বটে।