TMC বিধায়কের ২০২২ সালের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে টাকা নিয়ে হুমকি! পেল CBI

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই গ্রেফতার করেছিল তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। তাঁর পুকুরে ফেলে দেওয়া ফোন থেকে বেশ কিছু তথ্য পেল সংস্থা।

New Update
jiban

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার মোবাইলে দুর্নীতির তথ্যের ভান্ডার। পুকুরে ফেলে দেওয়া জীবনকৃষ্ণ সাহার মোবাইল থেকে মিলল বেশ কিছু তথ্য। টাকা দিয়েও পাওয়া যায়নি চাকরি। টাকা ফেরত চাওয়ায় পাল্টা চাকরিপ্রার্থীকেই হুমকি বিধায়কের, এমনটাই দাবি করল সিবিআই। ২০২২ সালের অক্টোবরের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট উদ্ধার করল সিবিআই। রীতিমতো পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুমকিও দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। কিছুটা টাকা ফেরত দেবেন বলেছিলেন এবং তারপর বাকি টাকা দেবেন বিধায়ক। তাতেই পাল্টা প্রশ্ন করেন চাকরিপ্রার্থী যে বাকি টাকা কবে দেওয়া হবে তাঁকে? উত্তরে বিধায়ক হুমকি দেন, গ্রেফতার করানোর হুঁশিয়ারিও দেন।

টানা ৬৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি চালানোর পর সিবিআই গ্রেফতার করেছিল মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হিসেবে এখনও পর্যন্ত যতজন তৃণমূল বিধায়ক ও নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে সিবিআই-কে সবচেয়ে বেশি নাকানিচোবানি খাইয়েছেন তিনি। সিবিআই গ্রেফতারি থেকে বাঁচতে অসুস্থতার কথা বলে বাথরুম যাওয়ার নাম করে গিয়ে দুটি মোবাইল বাড়ির সামনের ডোবায় ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। দু’টি পেনড্রাইভ এবং একটি হার্ডডিস্কও ফেলে দেন জলে। তবুও শেষরক্ষা হয়নি। প্রায় ৩২ ঘণ্টা তল্লাশির পর ডোবা থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরে পাওয়া যায় আরো একটি ফোন। জলে পড়লেও সম্পূর্ণভাবে অক্ষত ছিল সেই দুটি ফোন। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্যের পরে জীবনকৃষ্ণই তৃতীয় বিধায়ক যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সম্প্রতি জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। চার্জশিটে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা, ঘুষ নেওয়ার মতো অভিযোগের পাশাপাশি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এনেছে গোয়েন্দা সংস্থা। 



২০২১ সালে বড়ঞায় বিজেপি প্রার্থী অমিয় দাসকে ২ হাজার ৭৫৩ ভোটে পরাজিত করেন এই বিধায়ক। কলেজ জীবন থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ছিলেন। ২০১৩ সালে টগর সাহাকে বিয়ে করেন জীবনকৃষ্ণ। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় বাড়ির কাছেই একটি প্রাইমারি স্কুলে চাকরি পান স্ত্রীও। ওই বছরেই শ্যালক নিতাই সাহাও প্রাইমারি স্কুলে চাকরি পেয়ে কাজে যোগ দেন। ২০১৩ সালে বীরভূমের নানুরে একটি হাইস্কুলে শিক্ষকতায় যোগ দেন জীবনকৃষ্ণ। ২০২১ সালে ট্রান্সফার নিয়ে অন্য স্কুলে শিক্ষক পদে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তৃণমূলের টিকিটে বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়ে বড়ঞায় জয়ী হন। বিধায়ক পদ লাভ করার পর শিক্ষকতা ছেড়ে দেন।