বিশ্ব রাজনীতির কবলে বাংলাদেশের রাজনীতি

বিদেশি ঝোঁক! বাংলাদেশের প্রতি আমেরিকার মূল আগ্রহ বঙ্গপোসাগরে গভীর সমুদ্র ঘাঁটি। বাংলাদেশের রাজনীতির খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে এই প্রতিবেদন।

author-image
Pallabi Sanyal
New Update
১২

ফাইল ছবি



জুয়েল রাজ, লন্ডন : ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই তিন দিনব্যাপী 'ধর্মীয় স্বাধীনতায় অগ্রগতি' শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের শেষে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় কারণে নির্যাতিত ২৭ জনের সাথে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করেন। এই ২৭ জনের মাঝে একজন ছিলেন বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেত্রী প্রিয়া সাহা। সেখানে বাংলাদেশের প্রিয়া সাহা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চীন, পাকিস্তান, কিউবা, আফগানিস্তান, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে যাওয়া মায়ানমারের বাস্ত্যুচ্যূত নাগরিকও। সেখানে বাংলাদেশি প্রিয়া সাহা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করে বলেন, "আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে ৩৭ মিলিয়ন (৩ কোটি ৭০ লাখ) হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিস্টানকে গুম (disappear) করা হয়েছে। এখনো সেখানে ১৮ মিলিয়ন (১ কোটি ৮০ লাখ) সংখ্যালঘু জনগণ রয়েছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ত্যাগ করতে চাই না। আমি আমার ঘর হারিয়েছি, আমার জমি নিয়ে নিয়েছে, আমার ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে কিন্তু সে সবের কোনো বিচার নেই"। ট্রাম্প জানতে চান কারা এসব করছে? জবাবে ওই নারী বলেন, " উগ্রবাদী মুসলিমরা এই কাজ করছে। সবসময় তারা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে এই কাজ করে।'' 

এই যে রাজনৈতিক  প্রশ্রয় কথাটি অনুধানযোগ্য তিনি আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা কোন ইসলামী দলের নাম বলেন নি। কিন্ত দলমত নির্বিশেষে  সেদিন প্রতিবাদ করেছিলেন, প্রিয়া সাহার বক্তব্যের।  বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির উদাহরণ  আর স্মৃতিচারণে ভরে উঠেছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে পত্রিকার পাতা, টেলিভিশন টক শো সব। সেখানে আওয়ামী লিগ বিএনপি,  বাম, ডান সব দলের মানুষই সেই প্রতিবাদে সামিল হয়েছিল। তাদের বক্তব্য ছিল,  বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির এক অভয়ারণ্য। প্রিয়া সাহা মিথ্যাচার করেছেন। বহিঃবিশ্বে  দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। 

Why does Bangladesh matter to the United States? | The Financial Express

আমি সেই সময় একটা লেখায় উল্লেখ করেছিলাম, প্রিয়া সাহার বক্তব্যে বাংলাদেশের সম্প্রতির যে উদাহরণ প্রমাণে মানুষের যে চেষ্টা, সেটি আমাকে আশার আলো দেখায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে প্রিয়া সাহা আর বাংলাদেশেই ফিরে আসেননি। 

সেই একই ইস্যুতে অতি সম্প্রতি আরেকটা  বিশাল ঘটনা ঘটে গেছে । এবারের অভিযোগকারী কোনও বাংলাদেশি নয়, আমেরিকার ৬ জন সিনেট সদস্য। কংগ্রেসম্যান বব গুড, স্কট পেরি, ব্যারি মুর, টিম বার্চেট, ওয়ারেন ডেভিডসন ও কিথ সেল্ফ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে লেখা চিঠিতে দাবি করেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে হিন্দু জনসংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে। তারা আরো দাবি করেন, শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু খ্রিস্টান জনসংখ্যার উপাসনালয় পুড়িয়ে দিয়ে, লুটপাট করে, যাজকদের জেলে বন্দি করে, ধর্মান্তরিত করে এবং পরিবার ভেঙে দিয়ে নিপীড়ন করছে।যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি সভার ওই ছয় সদস্য বাংলাদেশ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনে দেশের জনগণকে সম্ভাব্য সর্বোত্তম সুযোগ দেওয়ার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।



অবাক করার বিষয় হচ্ছে এই ৬ কংগ্রেসম্যানের এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে কোথাও কোনও প্রতিবাদ হয় নি। শুধুমাত্র   যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ১৯২ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিক এই অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন।  সাধারণ মানুষের এই প্রতিবাদ না করার পিছনে মূল বক্তব্য অভিযোগের সুপারিশ বা দাবীর শেষ অংশে উল্লেখ করা হয়েছে। আর সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের নির্বাচন।  মূল লক্ষ্যবস্তু  নির্বাচন। সংখ্যালঘু  বা মানবাধিকার নয়। সাধারণ মানুষ বুঝে নিয়েছে আমেরিকা আসলে কি বলতে চায়। এই মায়া কান্না একটা অজুহাত ছাড়া আর কিছুই নয়। বিএনপি বা আওয়ামী বিরোধী দলগুলো এইসব সিদ্ধান্তে বেশ পুলকিত বোধ করেছেন। তার ভেবে নিয়েছেন, আমেরিকা তাদের পক্ষ হয়ে সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিবে। এই যে ভিসা নীতি কিংবা সংখ্যালঘু ,মানিবাধিকার বিষয়ে আমেরিকা হঠাৎ  সরব হয়ে উঠেছে। বিএনপি কিংবা আওয়ামী বিরোধী সংগঠন গুলো মনে করছে তাদের আন্দোলন বা বিরোধীতার ফসল , তাহলে ভুল করছেন। দেশীয় আভ্যন্তরীন রাজনীতি গত ১৪ বছরে যা করতে পারেনি তা দুইমাসে হয়ে গেছে বলে পুলকিত  বোধ করছেন ! তাদের পুলকিত হওয়ার  কোন কারণ আপাতত দৃষ্টিতে দেখছি না। 

Sheikh Hasina has done more for Bangladesh than anyone else, has no reason  to attack Yunus

বিএনপির মহাসচিব খুবই স্বজ্জন ব্যাক্তি , মীর্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্যের খন্ডিত অংশ ভাইরাল হয়েছে। তিনি বলেছেন, ''আমরা বিদেশীদের কাছে যাই না। বিদেশীরা আমাদের কাছে আসে।'' আসলেই তাই। তিনি সত্য কথাটাই বলেছেন। কারণ তারা বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে গেছেন। লবিস্টদের পিছনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ,পাউন্ড  ব্যয়  করেছেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখন যখন বিদেশীদের স্বার্থ প্রয়োজন তখন তারাই বিএনপির কাছে নিজে থেকে আসছে। 



একটা প্রবাদ  আছে , 'শীল পাটায় ঘষাঘষি প্রাণ যায় মরিচের ।' বাংলাদেশের অবস্থাও ঠিক তাই। আমেরিকার এই  বিরোধীতার পিছনে দেশীয় রাজনীতি  কোন উপলক্ষ্যই নয়। আমেরিকা তখনই  কোনও দেশের বিষয়ে নাক গলায় যখন তাদের স্বার্থ জড়িত থাকে। এর বাইরে তারা  কোথায় নাক গলিয়েছে , ইতিহাস বলে না। বাকি  মানবাধিকার , গণতন্ত্রের বয়ান শুধু কাগুজে বয়ান ছাড়া আর কিছুই নয়। বাংলাদেশের অবস্থাও ঠিক তাই । রাজনীতি  হচ্ছে আমেরিকা , চীন , রাশিয়া আর ভারতের । বাংলাদেশ সেখানে মরিচ। এর ভিতর আওয়ামী লীগ বিএনপি , বাংলাদেশের নির্বাচন , মানবাধিকার এসব কোন ধাতব্য বিষয় নয়।  

১৯ জুন এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে, সোমবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গ্রেট হলে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন বলেছেন, আমরা তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করি না। তাইওয়ান বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এক চীন নীতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অবস্থান এখনও অটুট রয়েছে। তাইওয়ান প্রসঙ্গে এ নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি।

প্রতিবেদনের আরেক জায়গায় উল্লেখ করেছে , এ সময় ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, রাশিয়াকে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেবে না বলে সম্প্রতি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। তবে চীনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।

ভারত বাংলাদেশ ডলারের পরিবর্তে  নিজ নিজ দেশীয় মুদ্রায় বাণিজ্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে চালু হচ্ছে ডলারের বিকল্প মুদ্রা ব্রিকস ।রাশিয়ার সাথে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক , বাংলাদেশে চায়নার প্রভাব বৃদ্ধি , এত সবকিছু মিলিয়ে , কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে আমেরিকা । সেখান থেকে মূলত ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে আমেরিকা । 

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমেরিকার মূল আগ্রহ বঙ্গপোসাগরে গভীর সমুদ্র ঘাঁটি। দক্ষিন এশিয়ায় এই জায়গা ছাড়া তাদের আর বিকল্প নেই। আবার ভারত ছাড়া তাদের দক্ষিণ এশিয়ায় আর  কোনও ক্ষমতাধর বন্ধুও নেই। তাদের একমাত্র বন্ধু পাকিস্তানকে  মোটামুটি পথে বসিয়ে ছেড়ে দিয়েছে আমেরিকা। তাই মূল দেন দরবার  চলছে চীন, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে, বাংলাদেশকে  চাপ দিয়ে সেই ঘাঁটি  নির্মাণ । 

Will Bangladesh ever have a future? | Mint

আর রবিবার (১৮ জুন ২০২৩) স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে , প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ''বাংলাদেশ অন্য কারো ব্যাপারে হস্তক্ষেপে আগ্রহী না। তাই অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কেউ হস্তক্ষেপ করুক তা চায় না ঢাকা। কারো খবরদারির কাছে নতজানু হব না। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। এবং বারবার আমেরিকার বিরুদ্ধে তার শক্ত অবস্থান আমেরিকাকে ও আরো চ্যালঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। বাংলাদেশের মত দেশ আমেরিকাকে যদি মুখের উপর না করে দেয় । তাদের জন্য হজম করা একটু কঠিনই বটে।'' 



২ 

আমেরিকা যদি সত্যিকারের অর্থে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে তাদের ভূমিকা রাখার চেষ্টা করতো সর্ব প্রথম বিএনপি জামায়াত তথা চারদলীয় জোট কে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাত। 



কারণ বাংলাদেশে ভীন্ন ধর্মালম্বীদের রক্তের দাগ সবচেয়ে বেশি বিএনপির হাতে।  শুধুমাত্র ১৯৯০ সালে ভারতের বাবরী মসজিদ ইস্যুতে,  এবং ২০০১ সালে  জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী মাসব্যাপী  যে তান্ডব বিএনপি জামায়ত জোট  বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর চালিয়েছিল এর সঠিক বিচার হলে বিএনপি বাংলাদেশে রাজনীতি  করার অধিকার হারানোর কথা ছিল। 



ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে এমন গুজব ছড়িয়ে পরার পরে ১৯৯০ সালের অক্টোবরের শেষে ও নভেম্বরের প্রথম দিকে বাংলাদেশে বাঙালি হিন্দুদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আক্রমণ ঘটেছিল। হিন্দুদের উপর ৩০ অক্টোবর থেকে হামলা শুরু হয় এবং বিরতিহীন ভাবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তা চলতে থাকে।  এছাড়া এই ঘটনার সূত্র ধরে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মাত্রায় সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে হিন্দুদের উপর বিরামহীন অত্যাচার, নির্যাতন, লুটপাট, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণের মত জঘন্য নিষ্ঠুরতা চালাতে থাকে। বিশেষ করে ১৯৯২ সালের পুরোটা সময় ধরে এই বীভৎসতার মাত্রা ছিল বর্ণনাতীত  এবং সেই সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল বিএনপি সরকার। 



১৯৭১ সালের পাকিস্তানী হায়নাদের পিছু ফেলে ২০০১ সালের নির্বাচনের পরের দিন সকাল থেকে বিভিন্ন দলে বিএনপি ও জমায়াতের ক্যাডাররা বিভক্তি হয়ে গ্রামে গ্রামে নারকীয় তান্ডব চালিয়েছিল। তাদের মূল টার্গেট ছিলো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করা। ওইসব সম্প্রদায়ের তরুনী, যুবতী ও সুন্দরী গৃহবধূদের সম্ভ্রব্যহানী করেছে চারদলীয় জোটের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। যা ১৯৭১ সালের ভয়াবহতা থেকে কোন অংশেই কম ছিল না। 



সহিংসতা বেশিরভাগই ঘটেছে দক্ষিণ পশ্চিম বাংলাদেশে যেখানে বৃহৎ হিন্দু সম্প্রদায় ছিল। নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকেই হামলা শুরু হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক সম্পদ ধ্বংস করার, ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের আতঙ্কিত করা এবং তাদের সম্পত্তি দখল করার উদ্দেশ্যে আক্রমণগুলি পরিকল্পিত ছিল। বাগেরহাট জেলা, বরিশাল জেলা, ভোলা জেলা, বগুড়া জেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, চট্টগ্রাম জেলা, ফেনী জেলা, গাজীপুর জেলা, ঝিনাইদহ জেলা, যশোর জেলা, খুলনা জেলা, কুষ্টিয়া জেলা, মুন্সিগঞ্জ জেলা, নাটোর জেলা, নারায়ণগঞ্জ জেলা, পিরোজপুর জেলা, সিরাজগঞ্জ জেলা, সাতক্ষীরা জেলা, এবং টাঙ্গাইল জেলায় হিন্দুদের টার্গেট করা হয়েছিল। সেই সময়ের পত্রিকার পাতাগুলো খুললেই এখনো সেই দগদগে ক্ষত ভেসে উঠে। 

২০০৯ সালে বাংলাদেশ হাইকোর্ট নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।  ২০১১ সালে বিচার বিভাগীয় কমিশন তার তদন্তের ফলাফল জমা দেয়। প্রতিবেদনে ২৫ হাজার লোকের দ্বারা হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে টার্গেটেড সহিংসতার প্রমাণ পাওয়া গেছে যার মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-জামায়াত-ই-ইসলামী নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের ২৫ জন মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল ।  কমিশন জানিয়েছিল  সারাদেশে  ১৮ হাজারের ও বেশি   সংঘটিত হয়েছে । কয়েক হাজার ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে , প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্যাতনের ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছিল। এবং কমিশন লোকবলের অভাবে মাত্র ৩ হাজারের মত ঘটনার তদন্ত করেছিল। এই সব আলোচনার বিষয় হলো, আমেরিকা হঠাৎ  করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের  নিয়ে এত চিন্তিত হয়ে উঠেছে।  ধর্মীয় সংখ্যালঘু  প্রীতি নিয়,  নেপথ্যে বিশ্ব রাজনীতি৷  দক্ষিন এশিয়ায় আমেরিকার অবস্থান মজবুত করতেই বিশ্ব রাজনীতির রাজনীতিতে  বাংলাদেশে এবং শেখ হাসিনা।