ইরানের অজেয় ভাবমূর্তি ভেঙে পড়ার পর দেশজুড়ে দমন-পীড়নের আশঙ্কা

কি আশঙ্কা করা হচ্ছে?

author-image
Aniket
New Update
breaking new 2

নিজস্ব সংবাদদাতা: ১৩ জুন ইসরায়েলের অভূতপূর্ব এবং আকস্মিক হামলায় ইরানের অভ্যন্তরে নিরাপত্তার বর্ম ভেঙে পড়ে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ইরানের দীর্ঘদিন ধরে গড়ে তোলা অজেয় শক্তির ভাবমূর্তি চূর্ণ হয় এবং দেশটির নিরাপত্তাব্যবস্থা গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।

১২ দিনব্যাপী এই সংঘাতে ইরান একাধিকবার ইসরায়েলকে পাল্টা আঘাত হানে, যার ফলে তেল আবিবসহ বড় শহরগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং অন্তত ২৮ জন নিহত হন। যুদ্ধকালীন প্রতিরোধের এই সক্ষমতা ইরানের অভ্যন্তরে, এমনকি সরকারের বিরোধীতাকারীদের মাঝেও প্রশংসা অর্জন করে।

তবে সংঘাত শেষ হওয়ার পর দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বুধবার পর্যন্ত ইরান সরকার “ইসরায়েলের ভাড়াটে” বলে অভিযুক্ত করে অন্তত ৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সরকার শিগগিরই সংস্কারপন্থীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন শুরু করবে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য সহযোগিতার অভিযোগে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

iran israel

সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই, যিনি মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘতম সময় ক্ষমতায় থাকা শাসক, বর্তমানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় একটি বাঙ্কারে অবস্থান করছেন বলে সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই তিনি প্রকাশ্যে আসেননি। ৩৫ বছরের শাসনকালে তিনি বহুবার গণআন্দোলন কঠোর হাতে দমন করেছেন।

নিউ ইয়র্কভিত্তিক ইরান বিশেষজ্ঞ ও “হোয়াট ইরানিয়ান্স ওয়ান্ট” বইয়ের লেখক আরাশ আজিজি জানিয়েছেন, ইরানিরা এখন আতঙ্কিত—একটি ক্ষতবিক্ষত সরকার হয়তো তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিশোধ শুরু করবে এবং রাজনৈতিক ও নাগরিক পরিসর আরও সংকুচিত হবে।

তিনি বলেন, ইরানের বিদেশে থাকা বিরোধীরা দুর্বল এবং প্রভাবহীন, আর দেশের অভ্যন্তরে নাগরিক সমাজ প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানে এই হামলা কট্টরপন্থীদের মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছে, যারা বরাবরই মনে করে পশ্চিমা দেশ ও ইসরায়েল বিশ্বাসযোগ্য নয় এবং আলোচনার মাধ্যমেই দেশকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়। এখন সংস্কারপন্থী ও বাস্তববাদী নেতাদের ভাগ্য ঝুলে আছে—শাসনব্যবস্থার ভেতর পরিবর্তন এলে তারা টিকে থাকতে পারবে কি না, তা নির্ভর করবে সময়ের ওপর।