ঢাকার মৈত্রী যাত্রার সাথে সংহতি জানিয়ে লন্ডনে বাংলাদেশি ওয়ার্কার্স কাউন্সিল, যুক্তরাজ্যের সমাবেশ

নারীদের প্রতি বৈষম্য নিরসন করেই কেবল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
411a6754-5d84-4e31-9e0e-b80744001abd

File Picture

জুয়েল রাজ: ১৭ মে, শুক্রবার লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে ১৬ মে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রার সাথে সংহতি জানিয়ে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি ওয়ার্কার্স কাউন্সিলের উদ্যোগে 'লন্ডন সংহতি' নামে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স কাউন্সিলের সভাপতি হারুন রশিদের সভাপতিত্বে ও শাহানা আখতারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নারী–পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশের ঘোষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলন ছিল সকল ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে। কিন্তু অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

সম্প্রতি নারী কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর কতিপয় ধর্মান্ধ গোষ্ঠী প্রতিবেদন বাতিলের দাবি জানাতে গিয়ে নারীদের বিরুদ্ধে যে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছে, সমাবেশে তার তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

f1b1b293d77e3fa4ff329d7f235b3023

সমাবেশে সকল ক্ষেত্রে নারীর সম-অধিকারের দাবি জানিয়ে বলা হয়, নারী-পুরুষের সমান অধিকার বা সমতাই হল প্রকৃত সুবিচার ও সুশাসন। সমান উত্তরাধিকারই ন্যায়সঙ্গত এবং কন্যাদের সমান প্রাপ্য। পারিবারিক উত্তরাধিকার আইনগুলি বৈষম্যমূলক। আগামীদিনের গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে লৈঙ্গিক, জাতিগত, ধর্মীয়ও শ্রেণিসহ সকল ধরনের বৈষম্য অগ্রহণযোগ্য।

নারীদের সমান কাজে পুরুষদের সমান মজুরি দাবি করে সমাবেশ থেকে বিদ্যমান বৈষম্যমূলক পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে নারী-পুরুষকে সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয় এবং বলা হয়, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার ক্ষেত্রে নীরবতা কেবল বাংলাদেশের সামাজিক জীবনে নৈরাজ্য ও অপরাধ প্রবণতাকেই সাহায্য করবে।

নারীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর বক্তব্য দানকারীদের বিরুদ্ধে সরকারকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে সমাবেশে বলা হয়, নারীর নিজের পছন্দ মতো পোশাক পরিধানের স্বাধীনতা থাকতে হবে। পোশাক নিয়ে জোর-জুলুম নিকৃষ্ট ফ্যাসিবাদেরই বহিঃপ্রকাশ। নারীর পোশাককে আক্রান্ত নারীর বিরুদ্ধে অপরাধের পক্ষে যুক্তি হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

সমাবেশ থেকে নারী কমিশন প্রতিবেদন নিয়ে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রাখা এবং বৈষম্যহীন, সমতাভিত্তিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবাইকে সামিল থাকার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, জনগণের অর্ধেক—নারীদের প্রতি বৈষম্য নিরসন করেই কেবল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

সংহতি সভায় বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স কাউন্সিলের সেলিনা সাফি, রহিমা খাতুন জুলি, ড. আয়েশা সিদ্দিকা, সুলতানা রশিদ জলি, শেফালি বেগম শেফা, টাওয়ার হ্যামলেটস লেবার পার্টি গ্রুপের প্রধান কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম, সোস্যালিস্ট পার্টি অব ইংল্যান্ডের হুগোপিয়েরে, নিজর মানুষের আজফার শাফি, ভারতের স্টুডেন্টস ফেডারেশনের (এসএফআই) যুক্তরাজ্য শাখার অঙ্কিতা সরকার, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নিসার আহমেদ ও আবেদ আলী; বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মোস্তফা ফারুক, বাংলাদেশ জাসদ-এরশামীম আহমেদ, বাসদের হুমাযূন খান; ওয়ার্কার্স কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার বিন আলী, ড. আখতার সোবহান মাসরুর; উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও সত্যেন সেন স্কুল অব পারফর্মিং আর্টসের শেখ নুরুল ইসলাম ও গোপাল দাস; এআর টিভির রিপোর্টার জয়দ্বীপ রায় প্রমুখ।

সংহতি সমাবেশের শুরুতেই জাতীয় সংগীত ও গণসংগীত পরিবেশন করেন উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও সত্যেন সেন স্কুল অব পারফর্মিং আর্টস।