/anm-bengali/media/media_files/2025/07/19/nito100-540d2f85280441099b1a16d958e298f5-2025-07-19-09-31-14.jpg)
File Picture
নিজস্ব সংবাদদাতা: ‘সুগার-ফ্রি’ পানীয়, কেটো স্ন্যাকস বা ডায়াবেটিকদের জন্য তৈরি আইসক্রিমের মতো জনপ্রিয় খাবারগুলিতে ব্যবহৃত হয় ইরিথ্রিটল নামে একধরনের কৃত্রিম মিষ্টি উপাদান। ক্যালোরি কম, প্রায় ৮০ শতাংশ চিনির মতো মিষ্টি, আর রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না বলেই এটি দীর্ঘদিন ধরে ‘নিরাপদ’ বিকল্প হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু, ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো বোল্ডারের বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক এক গবেষণার ফল বদলে দিতে পারে সেই ধারণা।
গবেষণাটি নেতৃত্ব দিয়েছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. ক্রিস্টোফার ডি’সুজা। ল্যাবরেটরিতে মানুষের মস্তিষ্কের রক্তনালীর কোষে তিন ঘণ্টা ইরিথ্রিটলের প্রভাব পরীক্ষার পর দেখা যায়, কোষগুলিতে একাধিক ক্ষতিকর পরিবর্তন ঘটছে। রক্তনালী স্বাভাবিকভাবে প্রসারিত রাখে যে নাইট্রিক অক্সাইড, তার মাত্রা কমে যায়। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় এন্ডোথেলিন-১ নামক প্রোটিন, যা রক্তনালী সংকুচিত করে। পাশাপাশি, প্রাকৃতিকভাবে রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে যে t-PA নামের উপাদান, সেটিও কার্যকারিতা হারায়। কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস দ্বিগুণ হয়ে যায়, যা কোষ ধ্বংসের পথ খুলে দেয়।
এই গবেষণার তাৎপর্য এই যে, মাত্র একটি সোডার ক্যানের পরিমাণ ইরিথ্রিটল শরীরে পৌঁছেই এমন পরিবর্তন আনতে পারে। এর অর্থ, নিয়মিত ইরিথ্রিটল গ্রহণ মস্তিষ্কের রক্তনালীগুলিকে সংকুচিত করে ফেলতে পারে এবং প্রাকৃতিকভাবে জমাট ভাঙার ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
/anm-bengali/media/post_attachments/cdn/shop/articles/no-sugar-benefits-of-cutting-down-sugar-intake-sugar-in-a-spoon_1240x-849245.jpg?v=1682064677)
এই গবেষণার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থাকলেও, শিকাগোর নিউরোলজিস্ট ড. থমাস হল্যান্ড জানিয়েছেন, নিয়মিত ইরিথ্রিটল গ্রহণ মস্তিষ্ক এবং রক্তপ্রবাহের স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাঁর মতে, স্টেভিয়া বা মধুর মতো প্রাকৃতিক বিকল্পের দিকে ঝোঁকা ভালো।
ইতিপূর্বেও ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, যাঁদের রক্তে ইরিথ্রিটলের পরিমাণ বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা ভবিষ্যতে বেড়ে যায়। আরেক গবেষণায় দেখা যায়, মাত্র ৩০ গ্রাম ইরিথ্রিটল (যেমন একটি পিন্ট সুগার-ফ্রি আইসক্রিমে থাকে) গ্রহণ করলে রক্তের প্লেটলেট দ্রুত জমাট বাঁধতে শুরু করে, যা ঝুঁকিপূর্ণ।
এই গবেষণার প্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞরা এখনই আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে বলছেন। ইরিথ্রিটল ত্যাগ না করলেও, নিয়মিত ও অতিরিক্ত গ্রহণ বন্ধ করা উচিত। খাবারের লেবেল পড়ে বোঝার অভ্যাস গড়ে তুলুন, কোথায় ইরিথ্রিটল বা ‘সুগার অ্যালকোহল’ ব্যবহৃত হয়েছে, সেটি লক্ষ্য করুন। সুগার-ফ্রি মানেই যে তা শরীরের পক্ষে নিরাপদ, সেই ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us