কুড়মি আন্দোলনের প্রভাব ভোটে! শাসকদলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে মনোনয়নে নেতারা

কুড়মি আন্দোলন প্রভাব এবার পড়ল পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটে। শাসকদলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মনোনয়ন জমা দেবে কুড়মি নেতারা।

New Update
kurmim

নিজস্ব প্রতিনিধি, শালবনী: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জঙ্গলমহলজুড়ে কুড়মি সম্প্রদায়ের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা গড়িয়ে গেল পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোট বাক্স পর্যন্ত। জঙ্গলমহলের শালবনীতে শাসকদলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে নিজেদের কুড়মি প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হাজির হল কুড়মি সম্প্রদায়ের নেতারা। জানাল যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাজুড়ে ৪০জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছে জঙ্গলমহলে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরের দিনেই ঘাঘরঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়ে দিয়েছিল যে এবার কুড়মি সমাজ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। পাশাপাশি তাদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে যে সংগঠনগুলি প্রতিবাদ করছে সেই সমস্ত প্রার্থীদেরও তারা ভোট দেবে না বলে ঘোষণা করেছিল। 

কুড়মি সম্প্রদায়ের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘাগরঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুমন মাহাত বলেন, 'শাসক দল থেকে বিজেপিসহ সমস্ত দলই বলেছে কুড়মি নাকি কোনও ফ্যাক্টর নয়। তাই আমরা আমাদের জাতের ভিত্তিতে পৃথক প্রার্থী দাঁড় করাতে চলেছি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়  ৩৫জন গ্রাম পঞ্চায়েতে, ২জন জেলা পরিষদে এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩জন প্রার্থী কুড়মি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন জমা দেবে। কুড়মিরা শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোট দেবে‌'। 

এই লক্ষ্যে জঙ্গলমহলে কুড়মি, মাহাতদের কোনও দেওয়ালে কোনও রাজনৈতিক দলকে প্রচার করতে দেয়নি গত একমাস ধরে। পরিষ্কার তারা জানিয়ে দিয়েছে যে তাদের কাছে 'জাত' আগে। অবিলম্বে কুড়মিদের এসটি সম্প্রদায়ভুক্ত না করলে এই বিদ্রোহ চলবে। সেই জন্য সমস্ত মাহাতদের অন্যান্য রাজনৈতিক দল ছেড়ে বেরিয়ে আসতে নির্দেশ দিয়েছে তারা‌। এর ফলে পঞ্চায়েতে প্রার্থী সংকট তৈরি হয়েছে জঙ্গলমহলে। তবে শাসক দলের পক্ষ থেকে শালবনীর তৃণমূল নেতা নেপাল সিংহ বলেন, 'জঙ্গলমহলের মাহাত, কুড়মিদের অনেকেই আমাদের সঙ্গে আছে। ওরা আলাদা করে কেন রাজনীতিতে মিশতে চাইছে জানি না, তবে এর কোনও প্রভাব আমাদের ওপর পড়বে না'। এদিন শালবনী বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে শেষ মুহূর্তে হাজির হওয়ায় কুড়মিদের ডিসিআর কাটা সম্ভব হলেও মনোনয়ন হয়নি। এবার আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ১৫জন প্রার্থী মনোনয়ন দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সুমন মাহাত।

সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ। বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার পর ঝাড়গ্রামে বিক্ষোভ দেখানোয় নবজোয়ার যাত্রা চলাকালীন বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছিল। জঙ্গলমহলে কুড়মিদের বিক্ষোভ নিয়ে তখন সাবধান করেছিলেন অভিষেক।