নিজস্ব সংবাদদাতা: আগামী ২ ও ৩ অক্টোবর ‘দিল্লি চলো অভিযান’ তৃণমূলের। তার আগে অভিযান দিল্লি যাওয়ার। অভিযানই বটে, কেননা গতকালই রেলের কাছ থেকে জোর ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। স্পেশাল ট্রেনের যে আবেদন জানানো হয়েছিল দলের তরফে, সেই আবেদন খারিজ করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। এর ফলে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ ভাষায় বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দিল্লি চলো হবেই। ট্রেনের বদলে এবার বাসেই হবে অভিযান”।
সেই মোতাবেক শুরু হয়েছে বাসে যাওয়ার প্রস্তুতি। নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে শুরু হবে যাত্রা। খাবার-দাবার খেয়ে প্রস্তুত আছেন দলীয় কর্মীরা ও জব কার্ড হোল্ডাররা। সবই তো ঠিক আছে। কিন্তু মূল সমস্যা বাঁধছে বাস জোগানেই।
কেননা, এই ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী, অল ইন্ডিয়া পারমিট থাকা আন্তঃরাজ্য চলাচলকারী বাসের প্রয়োজন। এই রাজ্যের কোনও বাস অন্য রাজ্যে যেতে পারবে না। সেই জন্যেই প্রয়োজন অল ইন্ডিয়া পারমিট। তবে এক্ষেত্রে ঘাস ফুল শিবির ৫০টি বাসের জোগাড় করতে পেরেছে।
তবে সমস্যা রয়েছে আরও। তৃণমূল প্রথম থেকে বলেছিল ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষকে নিয়ে তারা দিল্লিতে ধর্না দেবেন। কিন্তু যা পরিসংখ্যান বলছে, তাতে এই মুহুর্তে ইন্ডোরে মানুষের সংখ্যাটা হল ৫ হাজারের বেশি। তার মানে ৫০টি বাসে কোনও ভাবেই ৫০০০ মানুষ যেতে পারবেন না। প্রত্যেকটি বাসে আসন সংখ্যা ৬০ থেকে ৭০টা। দূরের যাত্রা বলে দাঁড়িয়ে যাওয়া কোনও ভাবেই সম্ভব না। গড় হিসেবে ধরলে, ৫০টি বাসে যদি ৭০টি করে আসন থাকে তাহলে সাড়ে ৩ হাজার মানুষ দিল্লি যেতে পারবেন। আর সবাইকে নিয়ে যেতে চাইলে বাসের সংখ্যা আরও ২৫টি বৃদ্ধি করতে হবে।
এখনও পর্যন্ত যা খবর পাওয়া যাচ্ছে, খারাপ আবহাওয়ার কারণে একটি বাসও যাত্রা শুরু করেনি। ৫০টির মধ্যে এসে পৌঁছেছে ২-৩টি বাস। ফলে গতকাল কিংবা গত পরশু থেকে আশা দলীয় কর্মী এবং জব কার্ড হোল্ডারসরা সেই নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বসে সময় কাটাচ্ছেন। দিল্লি সফর কতোটা দূরে, তাই বোঝার চেষ্টা করছেন তারা।
অন্যদিকে, বিরোধীদের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, এতো সমস্যা নিয়ে ‘দিল্লি চলো’ কি আদৌ হবে? যদি হয়ও, সেক্ষেত্রে অভিষেকের বার্তা ‘সকলে দিল্লি যাবেন’ কতোটা ফলবে? পরিস্থিতি কতোটা তৃণমূলের পক্ষে যাবে? একাধিক প্রশ্নের জটে এখন জটিল ‘দিল্লি চলো অভিযান’।