সুধা পদ্ধতিতে ধান চাষে দারুণ সাফল্য পেলেন কৃষকরা

author-image
Harmeet
New Update
সুধা পদ্ধতিতে ধান চাষে দারুণ সাফল্য পেলেন কৃষকরা

সুদীপ ব্যানার্জী, জলপাইগুড়ি: সুধা পদ্ধতিতে ধান চাষ করে দারুণ ভাবে সাফল্য পেলেন জলপাইগুড়ি কৃষকরা।  আবহাওয়ার পরিবর্তন হলেও এই পদ্ধতিতে ধান চাষে  কোনও প্রভাব পরে না। সমস্ত পরিবেশেই মানিয়ে নিতে সক্ষম। চিরাচরিত চাষের তুলনায় নয়া এই পদ্ধতিতে চাষ করা ধানের ফলনও বেশি। সুনিশ্চিত আমন ধানের চাষ (সিস্টেম অফ অ্যাসিওর্ড রাইস প্রোডাকশন) বা সুধা নামে এই চাষের পদ্ধতি জলপাইগুড়ি জেলার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যে বেশ সাড়াও ফেলেছে। উত্তরের পাহাড়ি এলাকাগুলি বাদে এই জেলাগুলির মধ্যে কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর রয়েছে। কৃষি দপ্তর জানিয়েছে,  এই চাষে মূলত সুস্থসবল ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন চারা তৈরিতে জোর দেওয়া হয়।পাশাপাশি  একবার এই চাষের সাফল্য মিলতে শুরু করায় তাঁরা পুরোনো পদ্ধতির চাষে ফিরতে কোনওমতেই রাজি নন কৃষকরা।

আমন ধান চাষের নয়া এই পদ্ধতি  নিয়ে এসেছেন  রাজ্যের কৃষি অধিকর্তা ডাঃ সম্পদরঞ্জন পাত্র।  নিজের এই পদ্ধতি  সফল হতে দেখে তিনি আপ্লূত । তিনি বলছেন,  এই চাষে কোনও কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। এই ধান করোনাকালে শরীরে রোগ প্রতিরোধক শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ে যাওয়া রোগের হাত থেকে মহিলারা রেহাইও পাবেন। ইতিমধ্যেই ধান চাষের এই পদ্ধতি আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত বইয়ে ঠাঁই পেয়েছে।

জলপাইগুড়ি সদর মহকুমার কৃষি অধিকর্তা (বিষয়বস্তু) মেহফুজ আহমেদ বলেন, এই পদ্ধতির আমন চাষে ফলনই যে শুধু বাড়ে তা নয়, উৎপাদিত চালে জিঙ্ক, বোরন, ক্যালসিয়াম, ফসফেট ও ভিটামিন বেশি থাকায় তা অন্য চালের তুলনায় বেশি পুষ্টিকর ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, ধান চাষের সাফল্য বীজতলার চারার ওপর নির্ভর করে। অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি, দুই-ই চারার পক্ষে ক্ষতিকর। সুধা-য় চাষের সময় লবণজলে বীজ ফেলে যেগুলি ডুবে যাচ্ছে, সেগুলিকে ধুয়ে নিতে কৃষকদের বলা হচ্ছে। এরপর ওই বীজ ২ শতাংশ জিঙ্ক সালফেট দ্রবণে ৩০ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে।  নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে বীজতলা থেকে সংগ্রহ করার পর কৃষকরা দুটি করে চারা মূল জমিতে রোপণ করছেন। দুটি চারার একেকটি গুচ্ছের সঙ্গে অন্য গুচ্ছের ব্যবধান ১০ ইঞ্চি রাখা হচ্ছে। সুধার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, শুকনো বা কাদানে, দুরকমের বীজতলাতেই ধানের চারা তৈরি সম্ভব।