/anm-bengali/media/post_banners/6VyC6a05KQI0nOJUwAIS.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতা, চন্দ্রকোনাঃ একদিকে যখন রাজ্যজুড়ে তীব্র দাবদাহ চলছে এসময় গরমের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ নানান পন্থা অবলম্বন করছে। এই গরমে বাইরে বেরিয়ে ছায়া দান করে ছাতা, এতে প্রখর রোদ থেকে নিজেকে কিছুটা হলেও আড়াল করতে পারে নিত্য পথচারীরা। এই মরসুমে ছাতার চাহিদাও তুঙ্গে,তাই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের কুঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দরবস্তি বালা গ্রামের ২৭ বছরের যুবক গণেশ শাল ব্যস্ত একচিলতে বাড়িতে ছাতা তৈরিতে।সংসারের কাজ সামলে গণেশের একাজে সঙ্গ দিয়ে চলেছে তার স্ত্রী মালা।গণেশ ও মালার একটি ৩ বছরের কন্যা সন্তানও রয়েছে।প্রচন্ড দাবদাহে ঘামে ভিজে মাটির বাড়ির উঠানে স্বামী স্ত্রী মিলে ছাতা তৈরির কাজে ব্যস্ত।ছাতার চাহিদা তুঙ্গে থাকে গ্রীষ্ম ও বর্ষার মরসুমে।এই মরসুমে কালবৈশাখী বৃষ্টির দেখা নেই তার উপর চলছে তীব্র দাবদাহ,বেড়েছে ছাতার ব্যবহার।একপায়ে ভর করেই ছাতা তৈরি করে সংসারের হাল ধরেছে গণেশ শাল।জানা যায়,বছরখানেক আগে কোভিড কালে বাদ গেছে পরিবারের একমাত্র সম্বল গণেশের ডান পা।আগে মার্বেল পাথর বসানোর মিস্ত্রি হিসাবে কাজ করত গণেশ।অন্যের বাড়িতে মার্বেল পাথর বসানোর কাজ চলাকালীন পড়ে গিয়ে ডান পায়ে চোট লাগে,তা ক্রমশ খারাপের দিকে যায়।বহু ডাক্তার দেখিয়েও বিশেষ লাভ হয়নি,একসময় ডাক্তারের পরামর্শে বাদ যায় ডান পা।তারপর বাড়িতেই দিন কাটছে গণেশের,বাড়িতে বসে তো আর সংসার চলেনা।ছাতা তৈরির কাজ রপ্ত করে বাড়িতেই তা বানিয়ে সপ্তাহে সপ্তাহে দিয়ে আসতে হয় মহাজনের কাছে।গণেশ জানায়,ঘাটালের রাধানগরের ঈশ্বরপুরে এক মহাজনের কাছ থেকে ছাতা তৈরির সব সামগ্রী নিয়ে আসি এবং এক সপ্তাহের মধ্যে ৬০০ টি ছাতা বানিয়ে আবার দিয়ে আসতে হয়।এই এক পায়ের সাহায্যে টোটো নিয়ে সপ্তাহে দুবার যাতায়াত করতে হয়।সপ্তাহের শেষে মহাজনের থেকে মজুরি হিসাবে ১০০০-১২০০ টাকা মিলে বলে দাবি গণেশ শালের।এসময় তীব্র দাবদাহে ছাতার চাহিদা থাকায় স্বামী স্ত্রী মিলে তাই ঘাম ঝরিয়ে জোরকদমে চলছে ছাতা তৈরির কাজ।গণেশ ও তার পরিবারের আক্ষেপ,ডান পা বাদ পড়ার পর স্থানীয় বিধায়কের থেকে মিলেছে একটি হুইলচেয়ার তা ছাড়া সরকারি আর কোনও সাহায্য মিলেনি।ডান পা বাদ পড়ার পর প্রতিবন্ধী তালিকায় নাম তোলার জন্য সরকারি দপ্তরে তদ্বির করেও কোনও সুফল মিলেনি।এতে দমে না গিয়ে এই গরমের মরসুমে এক পায়ে ভর করে ছাতা তৈরি করে স্বনির্ভরতায় দৃষ্টান্তস্থাপন করে চলেছে চন্দ্রকোনার যুবক গণেশ।
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us