/anm-bengali/media/post_banners/zV6gBN1o5S9nl0itSDqi.jpg)
দ্বিগবিজয় মাহালীঃ সংসার চালানোর উপার্জন করতে নয়, পানীয় জলের জন্য মজুর খাটতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। সরকারি একমাত্র সাবমার্শিবল দীর্ঘ তিন বছর ধরে খারাপ বলে অভিযোগ। মাঝে এক-দু'বার সারাই হলেও এক মাসের বেশি চলে না। বছরের বাকি সময় স্থানীয় এক পরিবারের উপর নির্ভর করতে হয় পানীয় জলের জন্য। তার জন্য বছরে প্রতি পরিবার থেকে দুটি মজুর বিনাপারিশ্রমিকে দিতে হয়। এমনই ঘটনা মেদিনীপুর সদর ব্লকের মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের আদিবাসী অধ্যুষিত পিন্ডরাশোলে। এই এলাকায় প্রায় তিরিশটি আদিবাসী পরিবার রয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে মজুর খেটে পানীয় জল সংগ্রহ করার ঘটনায় আঙুল উঠছে পঞ্চায়েতের দিকে। ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তথা মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অঞ্জলি সরেন। এই মণিদহের তামাকবাড়ি এলাকায় কুঁয়োর ঘোলা জল পান করতে হয়েছে গ্রামবাসীদের। তারপর পিন্ডরাশোলের ঘটনা শোরগোল ফেলেছে এলাকায়। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহ করতে গেলে প্রধান ও তার স্বামী বাধা দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা, কালিপদ হেমরম, রাখী হেমরমরা বলেন, এলাকায় সরকারিভাবে একটি সাবমার্শিবল থাকলেও গত তিন বছর ধরে খারাপ হয়ে রয়েছে। মাঝে এক-দু'বার সারানো হলেও এক মাসের বেশি চলে না। পঞ্চায়েত প্রধানকে জানালেও সারানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ভোট এলেই প্রতিশ্রুতি দেয় সারানো হবে, জলের ট্যাঙ্ক হবে। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা পানীয় জলের ভরসা স্থানীয় শম্ভু হেমরমের বাড়িতে থাকা ব্যক্তিগত সাবমার্শিবল। সেখান থেকে দু'বেলা পানীয় জল সংগ্রহ করতে হয়। তার দরুন বছরে প্রতিটি পরিবারকে দুটি করে মজুর দিতে হয় বিনামূল্যে ধান লাগানো ও কাটার জন্য। বৃহস্পতিবার ধান কাটার এমনই চিত্র দেখা গেল ওই এলাকায়। পানীয় জলের দরুন এমন ঘটনায় জেলায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শম্ভু হেমরম বলেন, "তিন বছর ধরে গ্রামবাসীদের জল দিচ্ছি। প্রথমে এরকম কয়েকমাস চলার পর জল দিতে অস্বীকার করি বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল আসায়। আবারও ভাবি পাড়ার মানুষজন কোথায় যাবে জলের জন্য। সেই সময় অসহায় গ্রামবাসীরা আশ্বাস দেন বিদ্যুৎ বিলের টাকা দিতে না পারলেও বছরে দু'বার আমার ধান চাষে রোয়া ও কাটার জন্য প্রতিটি পরিবার থেকে বিনামূল্যে মজুর দেওয়া হবে। সেভাবেই গত তিন বছর ধরে চলছে।" তবে গত দু'দিন আগে পঞ্চায়েত থেকে সাবমার্শিবল সারানো হলেও কতদিন চলবে তা নিয়েও সংশয়ে গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, জলস্তর নিচে নামায় বেশিদিন জল উঠছে না। ঘটনা সামনে আসতেই স্থানীয় পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যদিও মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অঞ্জলি সরেন জানিয়েছেন, পানীয় জলের জন্য মজুর খাটার বিষয়টি জানি না। সাবমার্শিবল খারাপ হয়েছিল, সারানো হয়েছে।
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us