/anm-bengali/media/post_banners/xx2asFvjmKBeJikdE1fn.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ খুব সহজেই স্বল্প পরিশ্রমে সুগন্ধি জুঁই ফুলের চাষ সম্ভব। জুঁই একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ফুল। এই গাছগুলির উচ্চতা ১০-১৫ ফুট পর্যন্ত হয়। এর পাতা চিরসবুজ যা কিনা আড়াই ইঞ্চি লম্বা, সবুজ ও সরু কান্ডযুক্ত এবং এটি সাদা বর্ণের ফুল ধারণ করে। ফুলগুলি মূলত এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাসে ফোটে। যেকোনও মাটিতে জুঁই গাছের চাষ করা সম্ভব৷ তবে কাঁকরযুক্ত মাটি না হওয়াই শ্রেয়৷ জল সুনিষ্কাশিত জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ মাটি থেকে শুরু করে বেলে দোআঁশ মাটিতে ভালভাবে জন্মাতে পারে।
তবে এটি ভাল ফলাফল দেয় যখন সমৃদ্ধ বেলে দোআঁশযুক্ত মাটিতে জল সুনিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকে। সর্বোত্তম ফলাফলের জন্য মাটিতে গোবর সার পর্যাপ্ত পরিমাণে মিশ্রিত করে নিতে হবে। গাছ লাগানোর জন্য, মাটির পিএইচ 6.5 এর বেশি হওয়া উচিত নয়। জুই ফুল চাষে জমি তৈরীতে ভাল চাষ উপযোগী করার জন্য প্রথমে চারা রোপণের জমিটিকে আগাছামুক্ত করতে হবে. ক্ষেতের আগাছা মুক্ত করার জন্য এক-দু’টি প্রাথমিক চাষ প্রয়োজন। লাঙল করার পরে গর্তগুলি রোপণের এক মাস আগে ৩০ ঘনসেমি আকারে প্রস্তুত করা হয় এবং সূর্যের আলোর নিচে রেখে দিতে হবে। জমি তৈরির সময় প্রয়োজন মতো গোবর সার মাটির সাথে মিশ্রিত করতে হয়। এটি সাধারণত জুন থেকে নভেম্বর মাসে বপণ করা হয়। বিভিন্ন ব্যবধানে বিভিন্ন জাতের গাছ লাগানো হয়। সাধারণত গড়ে ১.৮ x ১.৮ মিটার ব্যবধান প্রয়োজন। জুই ফুল চাষে সার প্রয়োগের সময় নাইট্রোজেন ৬০ গ্রাম প্রতি গাছে, পটাশিয়াম ১২০ গ্রাম প্রতি গাছে এবং ফসফরাস ১২০ গ্রাম প্রতি গাছে আকারে সারের মিশ্রণ প্রয়োগ করতে হবে। এই সারের মিশ্রণটি সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করতে হবে। প্রথম ভাগটি জানুয়ারী মাসে দিতে হবে এবং দ্বিতীয় ভাগটি জুলাই মাসে দিতে হবে। অতিরিক্ত জৈব সার হিসাবে, নিমের খোল, সরিষার খোল ইত্যাদি দেওয়া খুবই ভাল। এদেরকে ১০০ গ্রাম প্রতি গাছে দেওয়া হয়। ফুলের ফলন বাড়াতে জিঙ্ক ০.২৫% এবং ম্যাগনেসিয়াম ০.৫% হারে স্প্রে করতে হবে। লৌহের ঘাটতি থেকে রক্ষা পেতে, মাসিক বিরতিতে ফেরাস সালফেটের বড়ি ৫ গ্রাম প্রতি লিটারে স্প্রে করতে হবে। ফসলের ভাল বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য আগাছা দমন অতি প্রয়োজনীয়। রোপণের ৩-৪ সপ্তাহ পরে প্রথম আগাছা তোলা উচিত এবং তারপরে প্রতি ২-৩ মাসে একবার করে আগাছা পরিষ্কার করা উচিত। ফুলের যথাযথ বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য সময়ের ব্যবধানে সেচ দেওয়া প্রয়োজন। গ্রীষ্মকালে সেচ সপ্তাহে একবার করা হয়। ফুল আসার পরে, পরবর্তী সার দেওয়া এবং ছাঁটাই পর্যন্ত কোনও সেচের প্রয়োজন হয় না। জুই ফুল চাষে শিকড় পচা রোগের লক্ষণগুলি হল বাদামি বর্ণের ফুসকুড়ি পাতার নিচের পৃষ্ঠে দেখা যায় এবং কখনও কখনও কান্ড এবং ফুলেও দেখা যেতে পারে। প্রতিকার হিসেবে কপার oxychloride ২.৫ গ্রাম প্রতি লিটারে মিশিয়ে মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়াও লাল মাকড়সার আক্রমণে পাতাগুলি তাদের রঙ হারাতে শুরু করে এবং অবশেষে ঝরে যায়। এর প্রতিকার হিসেবে সালফার ৫০% WP ২ গ্রাম প্রতি লিটারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। মূলত এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাসে ফুল সংগ্রহ করা উচিত। উদ্ভিদ রোপণের ৬ মাসের মধ্যে ফুল পরিপক্ক হয় এবং হাত দিয়ে মুখ বন্ধ কুঁড়ি তুলে নেওয়া হয়। ফুল তোলার কাজ মূলত ভোরবেলায় করা হয। বছরের পর বছর এর ফলন বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ প্রথম বছরে গড় ফলন হবে ৮০০/ একক, দ্বিতীয় বছরে গড় ফলন হয় ১৬০০ / একর, তৃতীয়তম বছরে গড় ফলন হয় ২৬০০ কেজি / একর, চতুর্থ বছরে গড় ফলন হয় ৩,৬০০ কেজি / একর ইত্যাদি। অর্থাৎ জুঁই ফুল চাষে কৃষকবন্ধুদের লাভ নিশ্চিত।
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us