ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গারা, রোহিঙ্গাদের গুলিতে আহত ৩

author-image
Harmeet
New Update
ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গারা, রোহিঙ্গাদের গুলিতে আহত ৩

হাবিবুর রহমান, ঢাকা : বাংলাদেশের কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্রমশ বাড়ছে অপরাধের ঘটনা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্যবিস্তার নিয়ে মাঝে মধ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। রোহিঙ্গাদের দাগী সন্ত্রাসীদের ১৩টি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। এই ১৩টি সশস্ত্র দলের সদস্যরা মাদক-বানিজ্য, অপহরণ ও চাঁদাবাজি করছে। এরা আগে দা, ছুরি, বলম্বের মতো সাধারণ অস্ত্রশস্ত্র নিয় চলাফেরা করলেও এখন অনেকেরই হাতে দেখা যাচ্ছে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল আর একে-৪৭ এর মতো মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র। বুধবারও টেকনাফ উপজেলায় তিন ভাইকে একদল রোহিঙ্গা গুলি করেছে। গুলিবিদ্ধরা হলেন ওই এলাকার মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ সালামত উল্লাহ (২৫), মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ (২১) ও মোহাম্মদ হাসান উল্লাহ (১৫)। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি সবকিছুই আছে তাদেরই নিয়ন্ত্রণে। 

জানা গেছে, বাংলাদেশের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইয়াবা কারবার, মানব পাচার ও চাঁদাবাজির জন্য তৈরির হয়েছে ১৩টি গ্রুপ। যার ফলে প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে আসছে সংঘর্ষের ঘটনা। এইসব রোহিঙ্গা গ্রুপের সাথে মাঝে মধ্যেই

সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। আহত ও নিহতের ঘটনা ঘটছে অহরহ। ২০১৭ সালে সবশেষ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর প্রথম বছর কিছুটা স্থিতিশীল ছিলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। কিন্তু পরে ক্রমশ শক্তি অর্জন করে নানা অপরাধে যুক্ত হতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। সাধারণ রোহিঙ্গাদের অভিযোগ এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলের কাছে অনেকটা জিম্মি তারা। দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানামুখী তৎপরতায় কিছুটা চুপচাপ থাকলেও রাতে পাল্টে যায় ক্যাম্পের দৃশ্যপট। চাঁদা, মাদক-বানিজ্য ও চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত এসব সশস্ত্র দল নিজেদের শক্তি জানান দিতে হরহামেশা নির্যাতন করে সাধারণ রোহিঙ্গাদের। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের মধ্যে মুন্না গ্রুপ, আনাস গ্রুপ, মাহাদ গ্রুপ, সালাম বা সালমান শাহ গ্রুপ, হাফেজ আহমদ গ্রুপ, হাকিম ডাকাত, নুরে আলম বাহিনী, জকির ডাকাতের গ্রুপ, আরসা, আল ইয়াকিন, আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি, আতাউল্লাহর বাহিনী, আরওসও, আরআরএসও গ্রুপগুলো ভয়ঙ্কর বেশি। এরা এমন কোন কাজ নেই যে তারা করছে না। শুধু মাদক পাচার কিংবা মানব পাচারই নয়, রোহিঙ্গা শিবিরে ক্রমশ বাড়ছে ধর্ষণের ঘটনাও।

 অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাড়ানো সত্ত্বেও কমেনি অপরাধের ঘটনা। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজেদের আধিপত্য এবং শক্ত অবস্থানই মাদক ও মানবপাচারের আন্তর্জাতিক চক্রগুলোর কাছে এসব সশস্ত্র দলের গুরুত্ব বাড়ায়। সেজন্য মরিয়া এসব বিবাদমান পক্ষ। তাই এদের প্রতিরোধে ক্যাম্পের ভেতর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো দরকার বলে মতামত তাঁদের। এদিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় তিন ভাইকে একদল রোহিঙ্গা গুলি করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ান ১৬-এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার মো. তারেকুল ইসলাম জানান, গতকাল বুধবার ভোরের দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া নেচার পার্ক এলাকায় তাদের গুলি করা হয়। তারা হলেন ওই এলাকার মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ সালামত উল্লাহ (২৫), মোহাম্মদ

রহমত উল্লাহ (২১) ও মোহাম্মদ হাসান উল্লাহ (১৫)। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, ছয়-সাতজনের রোহিঙ্গা দলটি অতর্কিতে এসে স্থানীয় বাসিন্দা মো. হাবিবুর রহমানের বাড়ির সদস্যদের মারধর করার পাশাপাশি এলোপাথাড়ি গুলি করে। এতে তিন ভাই গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে

রোহিঙ্গারা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে টেকনাফ থানার পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। গুলিবিদ্ধ তিনজনকে

উদ্ধার করে প্রথমে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে কক্সবাজার

সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানান পুলিশ সুপার।

তিনি প্রাথমিক তদন্তের তথ্যে বলেন, টেকনাফের ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা মোহাম্মদ বশরের ছেলে মো. হাসেমুল্লাহ (৩০), মো. নুরু (৩৫), আবু তাহের কালু (২৯), গোলাম নবীর ছেলে আব্দুর রহমান ভেজী (৩২), মো.

আজিমুল্লাহ (২৮) ও আব্দুর শুক্কুর এই হামলা চালায়। হামলার কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্থানীয়দের ধারণা, পূর্বশত্রুতার জেরে অথবা ডাকাতি সংগঠন করতে গিয়ে রোহিঙ্গারা এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে

জানান পুলিশ সুপার।









আরও খবরঃ

For more details visit www.anmnews.in

Follow us at https://www.facebook.com/newsanm