লকডাউনে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় নেশা ও চুরিতে আসক্ত ছাত্র !

author-image
Harmeet
New Update
লকডাউনে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় নেশা ও চুরিতে আসক্ত ছাত্র !

দিগবিজয় মাহালি, মেদিনীপুরঃ লকডাউনে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় পাল্টেছে ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন চিত্র। স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলার পাশাপাশি অবনতির চিত্রও উঠে এসেছে। এমনই এক চিত্র উঠে এল মেদিনীপুর শহরের তলকুই এলাকায়। স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনা ছেড়ে নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে এক ছাত্র। এমনকি নেশার টাকা জোগাড় করতে চুরি করতেও পিছপা হয়নি। ঘটনাটি মেদিনীপুর শহরের তলকুই এলাকায়। ওই এলাকার বাসিন্দা বাবুরাম সরেনের মেজো ছেলে সনাতন সরেন। বাবুরাম মেদিনীপুর পৌরসভার অস্থায়ী শ্রমিক। পরিবারে তিন ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে শ্রমিকের কাজে নিযুক্ত হয়ে গিয়েছে। মেজো ছেলে সনাতন সরেন সপ্তম শ্রেণীতে পড়তো এলাকার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে। লকডাউনের ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। তার জেরে বাড়িতে থেকে অসৎ পথে চলে যায় সনাতন। পড়াশোনা ছেড়ে শ্রম জীবন বেছে নেয় সে। সেই কাজে গিয়ে বিভিন্ন রকম নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর কাজ না করে নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতো প্রায় সময়। সেই নেশার টাকা জোগাতে ছোটখাটো চুরিতেও অভ্যস্ত হয়ে যায়। এমন কাজের একাধিক অভিযোগ আসার পর নিরুপায় বাবা-মা ছেলের হাত পা গলায় শিকল তালা দিয়ে বেঁধে রেখেছেন গত ৬ দিন ধরে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গেল স্বেচ্ছাসেবী ও পুলিশ। রবিবার তাঁকে উদ্ধার করে পাঠানো হল পুনর্বাসন কেন্দ্রে। এই বেঁধে রাখার কারণ জানাতে গিয়ে বাবুরাম কেঁদে ফেলেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। তিনি বলেন, "অনেক চেষ্টা করেছি, আমি নিরুপায়। নেশা ছাড়ানোর জন্য চিকিৎসা করাতে গেলে মাথা খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই বাড়িতে রেখে শুধরানোর চেষ্টা করেছি।" সনাতনের মা ডগর সরেন বলেন, "নিজেরা অনেক চেষ্টা করেও পারিনি। তাই এই কাজ করতে হয়েছে আমাদের। প্রশাসন যদি সহযোগিতা করে খুব উপকার হবে।" বাধ্য হয়ে পরিবার এই কাজ করেছে বলে জানান প্রতিবেশীরাও। সনাতনকে বেঁধে রাখা হয়েছে জানতে পেরে স্বেচ্ছাসেবী মেদিনীপুর শহরের যুবক ফারুক মল্লিক সেখানে হাজির হয়। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশের সহযোগিতা নেয় সে। পুলিশ এসে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। ফারুক মল্লিক জানায়, বিষয়টি জানতে পেরে আমি উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এবার পুলিশ বিষয়টা দেখছে। শুধরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন শিক্ষকরা। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির জেলা সম্পাদক উত্তম প্রধান বলেন, সরকার চাইছে ছেলে মেয়েরা শিক্ষা থেকে দূরে সরে বিপথগামী হোক। খেলা, মেলা, ভোট চললেও পঠন পাঠন বন্ধ রেখেছে। ছাত্র-যুব সমাজকে ধ্বংস করতে পাড়ায় পাড়ায় সরকারী অনুমতিতে মদের দোকান খোলা হচ্ছে।