/anm-bengali/media/post_banners/0U9g2ocuvODrQB1MPCcv.jpg)
বনমালী ষন্নিগ্রহী , বাঁকুড়া : সাল টা ইং ১৭৪২ খ্রী:, বাংলা সন ১১৪৯। সেই সময় মারাঠা সেনাপতি ভাস্করপন্ডিত বর্গীর একটি দলসহ বিষ্ণুপুর থেকে সোনামুখী আসে।এখানে লুটপাট করার জন্য বাদ্যভাণ্ড সহ 'হর হর বোম বোম' শব্দ করতে করতে রাণীর বাজারে মা কালীর মন্দিরের সামনে বর্গীদল সমবেত হয়। এখানে তখন মন্দিরের চারদিক গাছপালাতে পরিপূর্ণ ছিল। দিনের বেলাতেই অনেকে মন্দিরের সামনে আসতে সাহস করতো না। তখন দিবা অপরাহ্ণ। এই অঞ্চলের মানুষ জন সকলে বর্গীদের ভয়ে নিজ নিজ ঘরে নিজেদের বন্ধ করে রাখলেন। বর্গীদল বাজনা বাজাতে বাজাতে নাচতে লাগলো। তখন এক বৃদ্ধ সন্ধ্যায় দেবীমন্দিরে আলো দেওয়ার জন্য একটি প্রদীপ নিয়ে মন্দিরে মায়ের ঘটের সামনে রেখে বলিস্থানে হাড়িকাঠের সামনে প্রণামরত হলেন। এমন সময় বর্গীদলের সর্দার একটি খাঁড়া উঠিয়ে প্রণামরত বৃদ্ধকে বলি দিতে উদ্যত হলেন,কিন্তু মায়ের দৈবশক্তিতে ঐ উদ্যত খাঁড়া আর নামলো না, যেন পেছন থেকে কেউ টেনে রেখেছে এবং ঐ ঘাতক অন্ধ হয়ে গেলেন। তখন সেনাপতি তাঁর সাথীদের বললেন, 'কেন তোমরা আমার খাঁড়া পেছন থেকে টেনে রেখেছো'?? বর্গীদল থেকে উত্তর দিলো, "কেউ আপনার খাঁড়া পেছন থেকে টানে নাই"। সর্দার বললেন, "মন্দিরে প্রদীপটি এখনও জ্বলছে কিনা, আর যে বৃদ্ধ প্রণাম করছিলো সে আছে কিনা"?? অন্যান্য বর্গীরা উত্তর দিলো, "প্রদীপ ঠিকই জ্বলছে এবং বৃদ্ধ এখানেই আছে"।
সর্দার বললেন, "প্রদীপের আলো আমি দেখতে পাচ্ছি না ; তবে কি আমি অন্ধ হলাম? কোন দৈবশক্তিতে আমার খাঁড়া আটকানো আছে যে আমি খাঁড়া নামাতে পারছি না? আচ্ছা ঐ বৃদ্ধকে হত্যা না করে আটকাও এবং আমার পূর্ব্বাবস্থা প্রাপ্তির জন্য অনুরোধ করো"। ইতিমধ্যে ঐ বৃদ্ধ প্রণাম শেষ করে উঠে সব ব্যাপার বুঝতে পারলেন। তখন সকলে ঐ বৃদ্ধকে অনুরোধ করায় তিনি মন্দিরে মাঁয়ের ঘট হতে জল নিয়ে ঐ ঘাতক সর্দার এর চোখে এবং সর্বাঙ্গে শান্তি জল দিলেন। তখন সর্দার দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেলেন এবং তিনি খাঁড়া নামাতে পারলেন। সর্দার বৃদ্ধকে বললেন, "এখানে কোন দেবতা আছেন "? বৃদ্ধ উওর দিলেন,
" মা কালী আছেন "। বর্গী সর্দার বললেন, " মায়ী-ত কালী হ্যায় "। আমরা আর এখানে লুটপাট করবো না, কাটোয়া চললাম। বাজনা বাজাও " মায়ী-ত কালী হ্যায়, মায়ী-ত কালী হ্যায়"। তারপর বর্গীদল বাজনা বাজাতে ঐ রূপে মায়ের নাম করতে করতে সোনামুখী ছেড়ে চলে যায়। তখন থেকে মায়ের নাম
হলো " মায়ী- ত কালী " বা " মাঁ-ই-ত কালী "। তবে গত বছরের পাশাপাশি এ বছরও সরকারি নির্দেশিকাকে মান্যতা দিয়ে পুজো উদ্যোক্তারা পুজোর আয়োজন করেছেন । কালী পুজোর কার্নিভাল করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে. ফলে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা মন খারাপ সোনামুখী শহরবাসীর । মা-ই-ত কালী পুজো কমিটির কোষাধক্ষ্য শ্রীকান্ত দে এএনএম নিউজের মুখোমুখি হয়ে জানান, 'সরকারি নিয়ম মেনেই আমরা পুজোর আয়োজন করেছি । সরকার করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে যে গাইডলাইন দিয়েছে সেই গাইডলাইন মেনে পুজো স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে।'
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us