পুলিশ ট্রেনিং স্কুল তৈরি নিয়ে অনিশ্চয়তা

author-image
Harmeet
New Update
পুলিশ ট্রেনিং স্কুল তৈরি নিয়ে অনিশ্চয়তা

​সুদীপ ব্যানার্জী, শিলিগুড়িঃ শিলিগুড়ি নকশালবাড়িতে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের জন্য জমি চিহ্নিত করে রাখার পরেও জেলা প্রশাসন থেকে আজও সেই জমি দখলমুক্ত করা গেল না। জমি দখলদারদের কাছে একপ্রকার পরাজয় স্বীকার করে নিয়ে এবার পুলিশ ট্রেনিং স্কুল ওই এলাকা থেকেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তাভাবনা করছে প্রশাসন। মাস তিনেক আগে নকশালবাড়ি ব্লক প্রশাসন, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক এবং জেলা পুলিশের আধিকারিকের দল মেচি নদীর তীরে অবস্থিত সুরজবর মৌজায় ওই কাজের জন্য জমি মাপজোখ করতে গিয়েছিলেন। এলাকায় পৌঁছে দেখা যায়, সরকারি খাসজমি হওয়া সত্ত্বেও তা দখল হয়ে গিয়েছে। গোটা চত্বর প্লটিং করে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ধান চাষও করা হয়েছে। মাপজোখের সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখেও পড়তে হয়েছিল আধিকারিকদের। সরকারি জমি জবরদখল হওয়ায় সুরজবর মৌজায় প্রস্তাবিত পুলিশ ট্রেনিং স্কুল তৈরি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জমি দখলচক্রের দাপটে স্থানীয় ব্লক প্রশাসন ও পুলিশ কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ। এই দখলদারির সঙ্গে আবার নাম জড়িয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের। অধিকাংশ জমি তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারাই দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ। সেগুলি প্লটিং করে বিক্রিও করা হয়েছে। সরকার যাতে জমির দখল নিতে না পারে, সেজন্য পেছন থেকে স্থানীয় চাষিদের উসকানিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে দার্জিলিংয়ের জেলা শাসক শিলিগুড়ি মহকুমার অন্য ব্লকে জমি খোঁজার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা শাসক এস পন্নমবলম জানান, "সুরজবর মৌজায় ৩০ একর জমি গোর্খা ব্যাটালিয়নের নামে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৭৫ একর জমিতে পুলিশ ট্রেনিং স্কুল হওয়ার কথা ছিল। তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। ওখানে কৃষকরা চাষাবাদ করছেন। তাই কিছু করা যাচ্ছে না। প্রোজেক্টটি অন্য ব্লকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু সরকারিভাবে কোনও আদেশ এখনও আমরা পাইনি"। জানা গিয়েছে নকশালবাড়ি ব্লকের ভারত-নেপাল সীমান্তে মেচি নদীর তীরে সুরজবর মৌজায় প্রায় তিনশো একর সরকারি জমি রয়েছে। যার প্রায় সম্পূর্ণটাই দখল হয়ে গিয়েছে। নকশালবাড়ি ব্লকের অন্তর্গত মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় মণিরামজোত, কিলারামজোত, কেটুগাবুরজোত সংসদ এলাকার প্রায় দুশো  কৃষক এই জমি দখল করে চাষবাদ করেন। অনেক জমি প্লটিং করে মণিপুর, অসম, মেঘালয়, দার্জিলিংয়ের বাসিন্দাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। নকশালবাড়ি সুরজবর মৌজায় ৩০ একর জমিতে গোর্খা ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর এবং ৭৫ একর জমিতে পুলিশ ট্রেনিং স্কুল হওয়ার কথা ছিল।