লোহার শিকলে বাঁধা মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে, ভিক্ষে করছেন বৃদ্ধা মা

author-image
Harmeet
New Update
লোহার শিকলে বাঁধা মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে, ভিক্ষে করছেন বৃদ্ধা মা

নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুরঃ ১০ বছর ধরে লোহার শিকল দিয়ে বাড়ির উঠানে খূঁটিতে বাঁধা মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে,বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করে ছেলের চিকিৎসা চালাচ্ছেন মা। এমনই করুণ ছবি ধরা পড়লো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের কুঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুঁয়াপুর গ্রামে।ওই গ্রামের বাসিন্দা বছর ৪৫-এর ছবি পূজারি একচিলতে ভাঙ্গাচোরা মাটির বাড়িতে বসবাস করেন একমাত্র ছেলে প্রশান্ত পূজারিকে নিয়ে। জমি জায়গা চাষাবাদ কিছুই নেই, একমাত্র উপার্জনের পথ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষে করা। ছবি দেবীর স্বামী মারা গিয়েছেন অনেক আগেই। বর্তমানে মা ও ছেলে ভাঙ্গাচোরা মাটির বাড়িতে কোনওক্রমে দিন কাটান। ছেলে প্রশান্তর ছোট থেকেই মানসিক সমস্যা ছিল,বিগত ১০ বছর ধরে সঠিক চিকিৎসার অভাবে এখন ছেলে সম্পূর্ণ মানসিক ভারসাম্যহীন। একদিকে ছেলের এমন অবস্থা তারউপর পেট চালানোর কোনও পোক্ত সংস্থান নেই। তাই ১০ বছর ধরে বাড়ির উঠানে ছেলে প্রশান্তকে লোহার শিকলে বেঁধে তালাচাবি দিয়ে ভিক্ষে করতে চলে যান মা ছবি পূজারী। সকালে ছেলেকে খাইয়ে তাকে এভাবে শিকল দিয়ে বেঁধে বাড়ি বাড়ি ভিক্ষে করতে বেরিয়ে পড়ে মা। আর বাড়ির উঠানে দিনভর শিকল বাঁধা অবস্থায় থাকে ছেলে প্রশান্ত। শৌচকর্ম থেকে যাবতীয় কাজ উঠানেই করে প্রশান্ত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় প্রশান্তর ধারে কাছে কেউ যায়না। আর সরকারি সাহায্য বলতে রেশনটুকু। ভগ্নপ্রায় বাড়িতে এভাবেই দিন কাটছে মা ছেলের।রাজনৈতিক নেতা থেকে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও ছেলের চিকিৎসায় সরকারি সহযোগীতার কোনও আশ্বাস মিলেনি বলে অভিযোগ। এখন ভিক্ষা করা টাকা থেকে ছেলের চিকিৎসায় ঔষধ থেকে খাবার সবই জোগাড় করতে হয় মা ছবি পূজারীকে। যদিও এই খবর সম্প্রচার হতেই শিকল বাঁধা যুবকের বাড়িতে গিয়ে দেখা করে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস চন্দ্রকোনা ২ ব্লক প্রশাসনের। রবিবার বিকেলে চন্দ্রকোনার কুঁয়াপুর গ্রামে শিকল বাঁধা যুবক প্রশান্ত পূজারীর বাড়ি যান বিডিও অমিত ঘোষ,জয়েন্ট বিডিও অভিজিৎ পড়িয়া ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষ। পরিবারের সাথে দেখা করে কিছু ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেন পাশাপাশি সরকারি প্রকল্প কি কি মিলেনি খোঁজ নেন এবং সবরকম ভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দেন বিডিও সহ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি।