জলপাইগুড়ির পর এবার মেদিনীপুর, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পাশে পরিবহন দপ্তর

author-image
Harmeet
New Update
জলপাইগুড়ির পর এবার মেদিনীপুর, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পাশে পরিবহন দপ্তর
দিগ্বিজয় মাহালী, মেদিনীপুর: জলপাইগুড়ির গাজলডোবা এলাকাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হাতির হামলায়। মর্মান্তিক ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ। পরিবহন দপ্তরের পক্ষ থেকে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রছাত্রীদের বাহনে তুলে পৌঁছানো হল পরীক্ষা কেন্দ্রে। সেই বাহন এসকট করল বনদপ্তরের ঐরাবত যান ও বনকর্মীরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের হাতির উপদ্রব মেদিনীপুর সদর, শালবনী, গোয়ালতোড় এলাকায়। ওই এলাকাগুলির জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই বিশেষ পরিকল্পনা করেছিল পরিবহন দপ্তর ও বনদপ্তর। বাস ও অন্যান্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয় পরীক্ষার্থীদের জন্য। বনদপ্তরের ঠিক করে দেওয়া হাতির রুটগুলিতে কোথায়, কতগুলো গাড়ি লাগবে তা নির্ধারণ করা হয়। জেলার পরিবহন দপ্তরের আধিকারিক অমিত দত্ত জানান, "শুক্রবার সকাল থেকে জঙ্গলমহলের রুটে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন পিকআপ পয়েন্টে আমাদের গাড়ি যায়। সেখান থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের তুলে নিয়ে রওনা দেওয়া হয়েছিল পরীক্ষা কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে। বনদপ্তরের ঠিক করে দেওয়া রুটে গাড়ির সামনে ছিল বনদপ্তরের এসকট ঐরাবত গাড়ি। পরিবহন ব্যবস্থার প্রথম দিনে সমস্ত মাধ্যমিক ছাত্রছাত্রী এই সুবিধা গ্রহণ না করলেও পরবর্তী দিনে আশা রাখছি সকলেই এই গাড়িতে উঠবে।"

পশ্চিম মেদিনীপুরের চাঁদড়া, পিড়াকাটা, গোয়ালতোড় এলাকাতে নির্দিষ্ট পয়েন্টে গাড়ি ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে যাওয়া ও নিয়ে আসার কাজ করে তারা। এর মাঝেও অনেকেই বাইক বা অন্যভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টা করলে জঙ্গলের রাস্তায় থাকা বনকর্তা ও বনকর্মীরা তাদের আটকে পরবর্তীকালে পরিবহন দপ্তরের দেওয়া গাড়ি গুলিতে যাতায়াতের জন্য পরামর্শ দেয়। এমনই চিত্র দেখা গিয়েছে চাঁদড়ার জঙ্গলে। কলসীভাঙ্গা হাইস্কুলের দুই ছাত্রী একটি মোটর বাইকে করে জঙ্গল পথ দিয়ে আসছিল। চাঁদড়ার রেঞ্জার সুজিত পন্ডা তাঁদের আটকে জানিয়ে দেন, বাইকে না এসে সরকারী ভাবে যে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে তাতে আসার জন্য। সেই সঙ্গে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন বাজার গুলিতে হ্যান্ড মাইকিং করে বনদপ্তর জানিয়ে দেয় পরিবহন দপ্তর ও বনদপ্তরের পরিবহন সুবিধার কথা।

শিক্ষক থেকে ছাত্র-ছাত্রী সকলেই জানায়, এই ব্যবস্থায় আর্থিক ও পথ নিরাপত্তা দু'দিক থেকে সুবিধা হল মাধ্যমিকের ছাত্র-ছাত্রীদের। তবে মাধ্যমিকের দ্বিতীয় দিনের এই আয়োজন ছিল খানিকটা ভিভিআইপিদের মত। এক প্রকার আপ্যায়ন করে বাসে ছাত্র-ছাত্রীদের তোলা, সেইসঙ্গে বাসের সামনে ঐরাবত গাড়ির হুটার বাজিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া স্বস্তি এনে দিয়েছে অভিভাবকদের জন্যও। কলসীঙাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সরকার বলেন, "খুবই ভালো উদ্যোগ। সারা বছর এই এলাকায় হাতি থাকে। জমির ফসলের পাশাপাশি ঘরবাড়ি ভাঙার ঘটনাও ঘটেছে। জঙ্গল পথ পেরিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয় ছাত্র ছাত্রীদের। ছোট গাড়ির ব্যবস্থা হলে সরাসরি জঙ্গলের ভেতরে থাকা গ্রামগুলি থেকে পরীক্ষার্থীদের আসার সুবিধা হত।"