ট্রেন লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী প্রাক্তন প্রধানের স্বামী ও দুধের সন্তান, প্রকাশ্যে গোষ্ঠী কোন্দল!

author-image
New Update
ট্রেন লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী প্রাক্তন প্রধানের স্বামী ও দুধের সন্তান, প্রকাশ্যে গোষ্ঠী কোন্দল!

দেবাশিষ বিশ্বাস, কোচবিহার: কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার গীতালদহ ২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান বীথিকা বর্মনের স্বামী প্রদীপ বর্মন ও ছেলে চন্দ্রশেখর বর্মনের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে নতুন চাঞ্চল্য কোচবিহার জেলার রাজনীতিতে। বিথীকা বর্মণ পার্থ প্রতিম রায়ের অনুগামী বলেই পরিচিত। এমত অবস্থায় একমাস আগে সিতাই কেন্দ্রের বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার অনুগামীরা এই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে মুক্তা রায়কে নতুন পঞ্চায়েত প্রধান হিসাবে নিযুক্ত করেন। বুধবার সকালে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস যখন কোচবিহার থেকে দিনহাটা উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন ঠিক সেইসময় বিথীকা বর্মনের স্বামী ও ছেলে একসাথে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ঘটনায় শোকের ছায়া গোটা এলাকা জুড়ে।

দীর্ঘদিন ধরেই পার্থ প্রতিম রায় এবং রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল চলছিল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে। এমত অবস্থায় রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পন্থী সিতাই কেন্দ্রের বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া অনাস্থা এনে পার্থ প্রতিম রায় অনুগামী বলে পরিচিত বিথীকা বর্মণকে সরিয়ে নতুন পঞ্চায়েত প্রধান করার পরেই বুধবারের এই ঘটনা নতুন করে রাজনৈতিক আলাদা মাত্রা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, জগদিশ বর্মা বসুনিয়ার ডান হাত নুর আলম টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল প্রধানকে। শুধু তাই নয় প্রধান এবং তার অনুগামী সকলের বাড়িতে লাগাতার আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করেছিল বলে অভিযোগ। এমত অবস্থায় মানুষের চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন প্রদীপ বাবু। সাথে তার দুধের শিশু।

এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন কিছুক্ষণ আগেই তিনি খবর পেয়েছেন প্রাথমিক অবস্থায় আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে তবে ঘটনা তদন্তের পর এই সঠিক তথ্য জানা যাবে।

প্রদীপ বর্মন-এর ভাই সন্দীপ বর্মন সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, “মানসিক অবসাদের কারণেই আজকে এই কঠিন পথ বেছে নিতে হয়েছে তার দাদাকে। দিনে রাত্রে তার দাদাকে হুমকির সম্মুখীন হতে হতো। এমনকি টেলিফোনেও হুমকি দেওয়া হতো। টাকার চাপে জর্জরিত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। প্রচুর অর্থের দাবি ছিল তার দাদার কাছ থেকে। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, যারা তার দাদার সঙ্গে ছিল তারাই বিপক্ষে গিয়ে দাদার প্রতি অবিচার করেছে। মানসিক চাপ এবং টাকার চাপ সহ্য করতে না পেরেই নিজের ছেলেকে সাথে নিয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে তার দাদা। রাজনীতি তার দাদার জীবন কেড়ে নিল।

ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। পার্থ প্রতিম রায় মন্তব্য করে বলেন, দলীয় পর্যায়ে তদন্ত হবে। আত্মহত্যার পিছনে যদি কারো প্ররোচনায় থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই দল তার ব্যবস্থা নেবে। একই সাথে তিনি পুলিশ প্রশাসনের উপরে আস্থা রেখে বলেন, পুলিশ প্রশাসন গোটা বিষয়ে তদন্ত করুক নিরপেক্ষভাবে. তখনই সত্য-মিথ্যা সামনে উঠে আসবে।