নয়াগ্রামে পঞ্চায়েতি সভায় কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য

author-image
Harmeet
New Update
নয়াগ্রামে পঞ্চায়েতি সভায় কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রামঃ রবিবার ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম ব্লকের খড়িকামাথানি এলাকায় ঝাড়গ্রাম জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে পঞ্চায়েতি সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেত্রী মালা সাহা, নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মু সহ আরও অনেকে। মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে আয়োজিত পঞ্চায়েতি সভায় মহিলাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ওই সভায় রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, 'যারা একসময় বলেছিলেন লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকার খয়রাতি করছে, তারা এখন বলছে আমরা ক্ষমতায় এলে দুই হাজার টাকা করে দেবো।' তিনি আরও বলেন, 'গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল। কে কবে ক্ষমতায় আসবে তারপর মহিলাদেরকে দুই হাজার টাকা করে দেবে।' মহিলাদের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে রাজ্যের বিরোধীদল বিজেপি অনেক কথাই বলেছিল। এখন তাদের সুর উল্টো। লক্ষ্মীদের হাতে টাকা তুলে দেওয়ায় রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। মহিলাদের হাতকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ অতি প্রশংসনীয়। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, "পঞ্চায়েতে মহিলাদের জন্য ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ যিনি সূর্যের আলো দেখান, দৃষ্টি দেখান তাকে স্বাবলম্বী করে তোলা একমাত্র রাজ্য সরকারের লক্ষ্য। মহিলাদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার যথেষ্ট ভূমিকা পালন করেছে। তাই মহিলারা কোন অংশেই পিছিয়ে নেই।" সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তাই আজ পঞ্চায়েতে ৫০ শতাংশ আসনে মহিলারা নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করছেন।' তিনি কেন্দ্র সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প রাজ্যে চালু হয়েছে। আর ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ্মান যোজনা চালু হয়েছে। আয়ুষ্মান যোজনা প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র দেয় ষাট টাকা এবং রাজ্য দেয় ৪০ টাকা। কিন্তু আয়ুষ্মান যোজনা চালু করলে ৭০ লক্ষ মানুষ সুবিধা পেতেন। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে আড়াই কোটি মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন। রাজ্য সরকার চল্লিশ শতাংশ টাকা দিলেও আয়ুষ্মান প্রকল্পে কিন্তু ছবি থাকবে মোদি বাবুর। স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের যারা সমালোচনা করেছিলেন তারাই স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধা নিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন কন্যাশ্রী প্রকল্প নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। আর কন্যাশ্রী প্রকল্পকে নকল করে কেন্দ্র সরকার বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্প চালু করেছে। আগে পথ দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দেখানো পথেই তাকে নকল করে কেন্দ্র সরকার এসব করছে। সেই সঙ্গে তিনি শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করে বলেন, 'তার কথা কেউ বিশ্বাস করে না।' এছাড়াও তিনি বলেন, 'একসময় জঙ্গলমহল রক্তাক্ত হয়েছিল। রক্তের হোলি খেলা হতো প্রতিদিন। কিন্তু রাজ্যে ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গলমহলে রক্তের হোলি খেলা বন্ধ হয়েছে । উন্নয়নের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে।' ঝাড়গ্রাম জেলা হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। ঝাড়গ্রাম মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়েছে। তবুও বিরোধীরা বলবে ঝাড়গ্রামে কিছু হয়নি। ঝাড়গ্রামের আগে কি ছিল আর বর্তমান কি হয়েছে তা ঝাড়গ্রামের মানুষ ভালোভাবেই জানেন। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য তিনি মায়েদের পঞ্চায়েত নির্বাচনে অশুভ শক্তি বিজেপিকে এবং সিপিএমকে জঙ্গলমহল থেকে উৎখাত করার আহ্বান জানান।