ভারতের সম্পূর্ণ স্বাধীনতার ইতিহাস লিখনে দেশের শিক্ষকদের কর্মশালা

author-image
Harmeet
New Update
ভারতের সম্পূর্ণ স্বাধীনতার ইতিহাস লিখনে দেশের শিক্ষকদের কর্মশালা

দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : আজাদিকা অমৃত মহোৎসবে দেশের পূর্ণ ইতিহাস লিখতে সারা ভারতের শিক্ষকদের তিন দিনের কর্মশালা চলছে দিল্লির সেন্টার ফর কালচার‍্যেল রিসোর্স এণ্ড ট্রেনিং ( সি সি আর টি ) এর সভাগৃহে। ভারত সরকারের মিনিস্ট্রি অফ কালচার এর তত্ত্বাবধানে স্বয়ংক্রিয় জেলা ডিস্ট্রিক্ট তথ‍্য ভাণ্ডার বা ডিজিটাল রিপোজিটারি ( ডি ডি আর ) সারা ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাস অনুসন্ধানে ব্রতী হয়েছে। দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে জায়গা না হওয়া ঘটনা , তথ‍্যের পুরুদ্ধারে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উপর দ্বায়িত্ব দিচ্ছেন। ১১ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর তিন দিনের কর্মশালায় সারা ভারতের বিভিন্ন রাজ‍্য থেকে ৯১ জন অংশ নেন। আমাদের রাজ‍্য থেকে ৭ জন সুযোগ পেয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ২৩ বছর ধরে সি সি আর টি এর নানান কর্মকাণ্ডে যুক্ত সবং পশ্চিম চক্রের আশাপুরা প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের শিক্ষক অরিজিৎ দাস অধিকারী, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে তমলুক দক্ষিণ চক্রের নীলকুণ্ঠাবোর্ড স্কুলের স্বপন বর্মণ , উত্তর ২৪পরগনার সাধনপুর উলুডাঙা তুলসীরাম হাইস্কুলের সমীর জানা, হুগলির খামারপাড়া কাজী নজরুল প্রাঃ বিদ‍্যালয়ের নীলকমল মাইতি ও রানাগড় উচ্চ বিদ‍্যালয়ের ভাস্কর মণ্ডল, কলকাতার ইষ্টপয়েন্ট স্কুল ফর গার্লস থেকে মণীষা টীকাদার ও দমদম বাণীমন্দীর গার্লস হাই স্কুলের দূর্বা গাঙ্গুলী,এই কর্মশালায় তথ‍্য সংগ্রহ পদ্ধতি, তথ‍্য পরীক্ষা , সত‍্যতা যাচাই , তথ‍্যের ইতিহাস গুরুত্ব , তথ্য সূত্রের গ্রহণ যোগ্যতা , তথ‍্যের সাথে চিত্রের অনুসূত্র ইত্যাদি নানান বিষয়ে হাতেনাতে শেখানো হয়। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত্রি ৮টা পর্যন্ত এই কর্মশালায় নানান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবনী , তাঁদের গলা ও নানান ধরনের ভিডিও তুলে ধরে দেশাত্মবোধের চেতনা জাগরনের সাথে সাথে দেশ গঠনে তথা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস রচনায় শিক্ষকদের ভূমিকা তুলে ধরেন দেশের এই ক্ষেত্রের প্রথিতযশা অধ‍্যাপকগণ। বিভিন্ন রাজ‍্য থেকে অনালোচিত ঘটনা , ব‍্যক্তি যাঁদের তথ‍্য গুগুলে নাই অথবা ভুল তথ‍্যে সমৃদ্ধ তা সংশোধনের সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়ার তথ‍্যে না থেকে ঘটনার গভীরে গিয়ে আবেগ সরিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে আনার অভিনব উদ‍্যোগ নিয়েছেন সি সি আর টি তথা দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রক । এই কাজে ভরসা রেখেছেন শিক্ষকদের উপরই। শিক্ষকদের গবেষক হয়ে উঠে আজাদিকা অমৃত মহোৎসবে যুক্ত হয়ে দেশ সেবায় এগিয়ে আসতে বার্তা দেন।



সি সি আর টির উপ নির্দেশক রাহুল কুমার বলেন , " আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীগণ তাঁদের জীবন দেশের জন্য দান করেছেন । আপনরা তাঁদের জীবন কথা তুলে ধরে তাঁদের প্রতি সস্মান প্রদানের সাথে সাথে দেশ সেবায় অংশ নিন । এই কাজের জন‍্য ভারত সরকার বা সি সি আর টি কোন আর্থিক সাহায্য করতে সমর্থ নয় ।" সংস্থার ডাইরেক্টর ঋষি বশিষ্ট বলেন , " আপনারা মিনি ভারত । আপনারা দীর্ঘদিন শিক্ষার সাথে সংস্কৃতির মেল বন্ধনে আপনাদের অবদান আমাদের গর্ব । আমাদের সামনে নতুন ইতিহাস রচনায় আপনারা গবেষক হয়ে ভারতের স্বাধীনতায় যে সব ঘটনা ব‍্যক্তি আজও সবার অলক্ষ‍্যে তাদের তুলে আনা আমাদের কর্তব্য । আমার বিশ্বাস আপনরাই তা পারবেন ও সব ধরনের নিরপেক্ষতা বজায় রেখেই পারবেন । "

   এই ধরনের প্রশিক্ষণ পেয়ে ভীষণ খুশি অরিজিৎ বাবু। বলেন , " স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে আজ ৭৫ বছর পরেও যে দেশ সেবার জন‍্যে আমাদের অর্থাৎ শিক্ষকদের কিছু করার সুযোগ পেয়েছি তা সত্যিই গর্বের । এই বৃহৎ প্রয়াসে সকল শিক্ষক সহ সকলের নিঃস্বার্থ অংশগ্রহণে সমাজের আনাচে কানাচে , শহরের ওলিতে গলিতে হারিয়ে যাওয়া বা হারিয়ে যেতে চলেছে এমন ঘটনাগুলোর যথার্থ প্রকাশ দেশের সঠিক ইতিহাস রচনায় দিশা দেবে এটাতেই আমাদের সার্থকতা । "