New Update
/anm-bengali/media/post_banners/CWcUR944B8cyCmJlIsmz.jpg)
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রামঃ প্রাচীন বৈচিত্র্যপূর্ণ দেবী আরাধনা হচ্ছে জঙ্গলমহলের ভোলগ্রামে। গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের ভোলগ্রামে একজোড়া তলোয়ারকে দেবী দুর্গা জ্ঞানে পুজো করা হয়। প্রাচীন এই পুজো ঘিরে গ্রামবাসীদের মধ্যে উন্মাদনা থাকে। থাকে নিয়ম-নিষ্ঠা। প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের প্রাচীন রীতি মেনে হয় পুজো। কোনও মূর্তি নয়। রাজাদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া এক জোড়া তলোয়ারকে দেবী দুর্গার মন্ত্রে আরাধনা করেন ভোলগ্রামের কানাই দিগারের পরিবার। ভোলগ্রামের দিগার পরিবারের এই দেবী আরাধনাকে কেন্দ্র করে মেতে ওঠেন আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। ভোলগ্রামের প্রান্তিক চাষী দিগারদের বাড়িতে ওই দুটো তলোয়ার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তলোয়ার দুটি এখনও রয়েছে দিগার পরিবারের কাছে।
​
আজ থেকে ৩৫০ বছর আগে রাজ রাজত্বে দিগার পরিবারের সদস্যরা রাজার রাজকোষ ও সীমান্ত রক্ষার প্রহরী ছিল। প্রায় ৩০০ বছর আগে এই দিগারদের পাশের রাজ্য দখলের জন্য পাঠান রাজা। সেখানে সফল হয়ে ফিরলে রাজা তাদের ২ টি তলোয়ার উপহার দেন। সেই নিয়ে পুজো শুরু করেন দিগারেরা। আর সেই থেকে পুজো হয়। পরে রাজা তাঁদের এই উদ্যোগ দেখে মায়ের পুজোর আদেশ দেন। তারপর থেকেই ভোলগ্রামের দিগার পরিবারে দশভুজার পুজো শুরু হয়। আগে রাজ আমলে রাজ পরিবার থেকে পুজোর সামগ্রী আসত। এখন সে সব নেই। নিজেরাই তাঁদের পূর্ব পুরুষের রীতি অনুসরণ করে চলেছেন।
জানা যায়, ওড়িশা থেকে আগত রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দাস প্রহরাজের আমলে শুরু হয়েছিল এই পুজো। আজও সেই পুজো হয়ে আসছে। এখন রাজাও নেই। আর রাজত্বও নেই। তবুও প্রাচীন রীতি মেনে হয়ে আসছে অস্ত্র পুজো তথা দেবী আবাহন। প্রতি বছর ভোলগ্রামে শারদোৎসবের সময় পাশাপাশি দশটি গ্রামের মানুষ আনন্দে মেতে ওঠেন। পুজোকে কেন্দ্র করে মেলা বসে। আগে যাত্রাপালা হত। এখন সে সব হয় না। তবে রীতি মেনে খিচুড়ি আর পায়েস ভোগ সাধারণকে দেওয়ার নিয়ম এখনো চলে আসছে। সরকারি কোনও সহযোগিতা পেলে এই পুজোর ঐতিহ্য আর একটু রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে জানান শশাঙ্ক দিগার সহ দিগার পরিবারের সদস্যরা।
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us