জিনজিয়াংয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে চিন

author-image
Harmeet
New Update
জিনজিয়াংয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে চিন

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ চিনের জিনজিয়াং অঞ্চলে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ করল রাষ্ট্রসংঘ। বুধবার গভীর রাতে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে নির্যাতনের অভিযোগগুলো বিশ্বাসযোগ্য এবং মানবতার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অপরাধের বিষয়টি উল্লেখ করে। প্রায় এক বছর ধরে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। যদিও এই রিপোর্ট প্রকাশ না করতে দেওয়ার জন্য যতটা সম্ভব চেষ্টা করেছিল বেজিং। তবে, চিলির প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট রিপোর্টটিকে দিনের আলো দেখাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। তিনি বলেছেন, "আমি বলেছিলাম যে আমার মেয়াদকাল শেষ হওয়ার আগেই আমি এটি প্রকাশ করব এবং আমি তা করেছি।"



সুদূর পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলে কয়েক মিলিয়নেরও বেশি উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে চিনের বিরুদ্ধে। যদিও বেজিং এই দাবি ও প্রচারকে বারেবারে উড়িয়ে দিয়েছে। তারা জোর দিয়ে বলেছে যে চরমপন্থা মোকাবিলার জন্য জিনজিয়াংয়ে তারা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালাচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টে বলা হয়েছে, "সরকারের সন্ত্রাস দমন এবং 'উগ্রবাদ-বিরোধী' কৌশল প্রয়োগের প্রেক্ষাপটে জিনজিয়াংয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।" তথাকথিত ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারে রাখা লোকদের চিকিৎসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে রিপোর্টে। তাতে বলা হয়েছে, "যৌন এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক হিংসা, জোরপূর্বক চিকিৎসা, জোর করে আটকে রাখা, নির্যাতন বা খারাপ আচরণের অভিযোগগুলো বিশ্বাসযোগ্য। আইন ও নীতি অনুসারে উইঘুর এবং অন্যান্য প্রধান মুসলিম গোষ্ঠীর সদস্যদের প্রতি এই স্বেচ্ছাচারী এবং বৈষম্যমূলক আচরণ মৌলিক অধিকারগুলোর লঙ্ঘন। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ, বিশেষ করে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।"



রিপোর্টে বেজিং, রাষ্ট্রসংঘ এবং বৃহত্তর বিশ্বকে জিনজিয়াংয়ের পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, "মানবাধিকার পরিস্থিতির জন্য সরকার, রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংস্থার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও বিস্তৃতভাবে জরুরি মনোযোগ প্রয়োজন।" তবে, রিপোর্টে গণহত্যার কোনও উল্লেখ করা হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর মূল অভিযোগগুলোর মধ্যে এটি ছিল একটি। এই রিপোর্ট প্রকাশ হতেই অবশ্য বিরোধিতায় নেমে পড়েছে চিন। রাষ্ট্রসংঘে চিনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন জানিয়েছেন যে তার দেশ অধিকার মূল্যায়ন করার দৃঢ়ভাবে বিরোধী। তিনি বলেন, "তথাকথিত জিনজিয়াং ইস্যুটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে সম্পূর্ণ বানানো মিথ্যা এবং এর উদ্দেশ্য অবশ্যই চিনের স্থিতিশীলতা নষ্ট করা এবং চিনের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা। পশ্চিমা দেশগুলোর চাপে না পড়ে ব্যাচেলেটের স্বাধীন থাকা উচিত ছিল। এই রিপোর্ট কেবল রাষ্ট্রসংঘ এবং একটি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতাকে ক্ষুন্ন করে। এটি চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সম্পূর্ণ হস্তক্ষেপ।"