হাবিবুর রহমান, ঢাকাঃ বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকায় মাঠে-ঘাটে-ছাদে বজ্রপাতে হতাহতের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বজ্রপাতে কৃষক, জেলে, তরুণ ও কিশোরের মৃত্যু হচ্ছে। শুধুমাত্র শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বাংলাদেশের ৮ জেলায় বজ্রপাতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারী ও জয়পুরহাটে ২ জন করে মারা গেছেন। চুয়াডাঙ্গা, বগুড়া, নেত্রকোণা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ও লালমনিরহাটে মারা গেছেন ১ জন করে।
​বাংলাদেশে বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্য, তেমনই আর একট কারণ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। আর এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত দূষণ। দূষণের মাত্রা যত বাড়ছে, গড় তাপমাত্রা তত বাড়ছে। ফলে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হওয়ার আদর্শ পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। বজ্রপাতের সময় সাধারণত ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট ভয় থাকে। কিউমুলোনিম্বাস মেঘ তৈরি হয়, তখনই বজ্রঝড় হয়ে থাকে। কিউমুলোনিম্বাস মেঘ হচ্ছে খাড়াভাবে সৃষ্টি হওয়া বিশাল আকৃতির পরিচালন মেঘ; যা থেকে শুধু বিদ্যুৎ চমকানো নয়, বজ্রপাত-ভারি বর্ষণ-শিলাবৃষ্টি-দমকা-ঝড়ো হাওয়া এমনকি টর্নেডোও সৃষ্টি হতে পারে।
বায়ুমণ্ডলে বাতাসের তাপমাত্রা ভূ-ভাগের উপরিভাগের তুলনায় কম থাকে। এ অবস্থায় বেশ গরম আবহাওয়া দ্রুত উপরে উঠে গেলে আর্দ্র বায়ুর সংস্পর্শ পায়। তখন গরম আবহাওয়া দ্রুত ঠাণ্ডা হওয়ায় প্রক্রিয়ার মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়ে বজ্রমেঘের সৃষ্টি হয়। কিন্তু বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যাও কেন এত বাড়ছে? বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দেখা যাচ্ছে ঢাকা শহরের থেকে গ্রামীণ এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যু বেশি হচ্ছে। ফাঁকা মাঠে চাষের কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। এর অন্যতম কারণ কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করা উন্নত যন্ত্রপাতি। বর্তমানে চাষের কাজে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেশি হয়। আর এই সব যন্ত্রে বিদ্যুৎ আকর্ষিত হয়। সেই সঙ্গে ফাঁকা মাঠে কোনও উঁচু জায়গা না থাকায় মানুষের উপর বজ্রপাতের ঘটনা অনেক বেশি হচ্ছে। বজ্রপাতের এ দুর্যোগে প্রাণহানি ও আহত হওয়া ঠেকাতে মানুষের সচেতনতা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা।