/anm-bengali/media/post_banners/oUZJ4KgnAXnGZFR6zjUP.jpg)
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঘাটালঃ শিক্ষকের অভাবে দিন দিন কমছে পড়ুয়ার সংখ্যা। শিক্ষকের অভাবে স্কুল বন্ধ হওয়া ঠেকাতে স্কুলে শিক্ষকের ভূমিকায় গ্রামেরই এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। ঘাটালের বরকতিপুর জুনিয়র হাইস্কুলের এহেন দৈন দশা কাটাতে অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগ করুক সরকার, দাবি পড়ুয়া থেকে এলাকাবাসীর।
শিক্ষকের অভাবে স্কুল ছেড়ে অন্যত্র পালাচ্ছে পড়ুয়ারা আর যার ফলে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে, এমনকি শিক্ষকের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে পঠনপাঠন। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল ব্লকের মনসুকা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দীর্ঘগ্রাম বরকতিপুর জুনিয়র হাইস্কুলে। ২০১৬ সালে সরকারি অনুমোদন পেয়ে এই স্কুলের পথচলা। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত এই স্কুলে শুরুর দিকে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশ ভালোই ছিল। ২৩০ জন পর্যন্ত ছিল ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা। শুরু থেকেই ৪ জন গেস্ট টিচার দিয়ে চলতো পঠনপাঠন, বর্তমানে সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে একজনে। তিনিও বয়স জনিত কারণে সবদিন স্কুলে আসতে পারেন না। আর শিক্ষকের অভাবে অনেক অভিভাবক তাদের ছেলে মেয়েদের এই স্কুল থেকে অন্য স্কুলে নিয়ে চলে গেছেন বলে জানা যায়। এর জেরে বর্তমানে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা খাতায় কলমে ৬৬ জন হলেও স্কুলে হাজির হয় মাত্র ২৫-৩০ জন। একপ্রকার বলা চলে শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার কারণে স্কুল বন্ধের মুখে। এহেন পরিস্থিতিতে এলাকারই এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মনোজ ভূঁইয়া ভালোবেসে পড়ুয়াদের কথা চিন্তা করেই স্কুলে শিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন, শুধু মনোজবাবু নন স্কুলের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তার স্ত্রীও নাকি স্কুলে আসেন পড়ুয়াদের ক্লাস নিতে জানান মনোজ ভূঁইয়া। স্কুলের পড়ুয়ারাও এখন মনোজ বাবুকে প্রধান শিক্ষকের চোখেই দেখে এমনটাই পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যায়।
দোতলা স্কুল ভবন, আলো, পাখা, পানীয় জল, শৌচাগার থেকে সমস্ত পরিকাঠামো রয়েছে বরকতিপুর জুনিয়র হাইস্কুলে। রয়েছে নিয়মিত মিড ডে মিলের ব্যবস্থা। এর জন্য ৩ জন মিড ডে মিলের রাঁধুনি সহ জোগাড়ে রয়েছেন। তবে নেই শুধু শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে কোনও স্থায়ী শিক্ষক। গেস্ট টিচার বা স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দিয়ে একটা স্কুল পরিচালনা করা বা পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে কতটা অগ্রগতি হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। একটা ক্লাস রুমেই পাশাপাশি চেয়ারে বসে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস নিতে দেখা যায় অস্থায়ী শিক্ষক মনোজ ভূঁইয়াকে। স্কুলের রাধুনি থেকে ছাত্রছাত্রী সকলেই বলছে শিক্ষক না থাকায় স্কুলটা বন্ধের মুখে। তাদের দাবি, দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ হোক। পড়ুয়ারাও বলছে শিক্ষক আসলে তারা তাদের বন্ধুদেরও এই স্কুলে ফিরে আসতে বলবে। বরকতিপুর জুনিয়র হাইস্কুলের ঠিক পাশেই দুহাত দুরে রয়েছে বরকতিপুর আংশিক বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেই স্কুলের শিক্ষক নিখিলেশ কর। বরকতিপুর জুনিয়র হাইস্কুলে শিক্ষকের অভাব প্রসঙ্গে তিনিও চান অবিলম্বে এই স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ হোক নাহলে স্কুলটি বন্ধ হয়ে পড়বে। স্কুল চালু হওয়ার ৬ বছর পরও কেনো স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না এই স্কুলে? সূত্রের খবর, শিক্ষা দপ্তর ঢালাও এমন অনেক স্কুলের অনুমোদন দিলেও এখনও এইসব স্কুলগুলি শিক্ষা দপ্তরের শিক্ষা পোর্টালের সাথে অন্তর্ভুক্তি হয়নি আর যার জেরে এই সমস্যার সৃষ্টি।বরকতিপুর জুনিয়র হাইস্কুলের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে স্থানীয় থেকে ব্লক প্রশাসনের গোচরে থাকলেও তেমন কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলেই মত অনেকের।এই স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ আদেও হয় কিনা নাকি শিক্ষকের অভাবে পড়ুয়া শুন্য হয়ে পড়বে এই স্কুল?সে প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মনে।
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us