/anm-bengali/media/post_banners/0FiSQ83aAVwNSF9egmcs.jpg)
দিগ্বিজয় মাহালিঃ বন দফতরের কাজের পর্যালোচনা করতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আসছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বন বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সঠিক ভাবে হচ্ছে কি না, কোথায় ঘাটতি রয়েছে সে বিষয়ে তদারকির জন্যই পশ্চিম মেদিনীপুরে বনমন্ত্রী আসছেন। তার আগে বিভিন্ন রেঞ্জ অফিসারদের নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠকও হয়েছে মেদিনীপুর বনবিভাগে। সম্প্রতি গাছ পাচার রুখতে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জঙ্গল থেকেও পাচার হয়েছে শাল গাছ। জোর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বন দফতরকেও। তারপরই জেলায় বহু বেআইনি কাঠ চেরাই মিল সিল করে বন দফতর। পাশাপাশি জঙ্গলে গাছ পাচার রুখতে বন সুরক্ষা কমিটিগুলিকে আরও সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে বন দফতর। 'জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট' অর্থাৎ ‘যৌথ বন পরিচালনা’র কাজেরর ওপর বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিতে পারেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। থাকবেন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা সহ বন দফতরের বিভিন্ন আধিকারিকরা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৭ জুন মেদিনীপুর শহরে শহিদ প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে বৈঠকে উপস্থিত হবেন বনমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, ওই দিন একাধিক দাবি নিয়ে বনমন্ত্রীকে স্মারকলিপিও জমা দেবে বনকর্মীদের সংগঠন। ইতিমধ্যে মেদিনীপুর বনবিভাগের বহু রেঞ্জ ও বীট অফিস আধিকারিক শূন্য অবস্থায় রয়েছে। ফরেস্ট গার্ডের সংখ্যাও হাতেগোনা। ফলে বনমন্ত্রীর কাছে বনকর্মী নিয়োগ, প্রতিটি অফিসে গাড়ির ব্যবস্থা, বেতন কাঠামো সহ একাধিক দাবি জানানো হতে পারে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় 'জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট' এর কাজ। এই 'যৌথ বন পরিচালনা'র মাধ্যমে সারা দেশে নজির সৃষ্টি করেছে শালবনীর আড়াবাড়ি। দেশের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বনাঞ্চলগুলিকে টিকে থাকার পথ দেখিয়েছে। মেদিনীপুর বনবিভাগে বর্তমানে কি অবস্থা 'জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট'-এর, বনমন্ত্রী তারও খোঁজ নিতে পারেন বলে সূত্রের খবর। বন দফতর থেকে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর বনবিভাগে কমিটির সংখ্যা ২৮০ টি, তার মধ্যে সক্রিয় প্রায় ১৯০ টি। বাকিদের সক্রিয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে বন দফতর। এই কমিটিগুলি সক্রিয় না হলে বন ও বন্যপ্রাণ রক্ষা করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন অনেকে। জঙ্গল বাঁচানো সহ নানা কাজেই এই কমিটিকে ব্যবহার করা হয়। জঙ্গলে অনধিকার প্রবেশ, অন্যায় ভাবে জঙ্গল দখল, আগুন লাগানো, শিকার, চুরি প্রভৃতি কাজে বাধা দানের মাধ্যমে বন ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষা নিশ্চিত করার কাজ 'জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট' কমিটির। কোন অপরাধ সংগঠনকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের আটক করা বা আটক করতে বনকর্মীদের সাহায্য করা এবং মানুষ ও বন্যপ্রাণী সংঘাত কমাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করাও কমিটির কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। পাশাপাশি এলাকা থেকে হাতি সরানোর সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে কমিটির সদস্যদের। বন কমিটিকে এখন ৪০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হয় কাঠ বিক্রি থেকে। লভ্যাংশের পরিমাণ বাড়লেও সক্রিয় ভূমিকা কমেছে কমিটিগুলির। সম্প্রতি জঙ্গল থেকে রাতের অন্ধকারে পাচার হয়েছে শাল গাছ। কিছু এলাকায় স্থানীয় মানুষজন কেটে ফেলছেন। বন্যপ্রাণ শিকার আটকানো এবং হাতি তাড়ানোর সময়ও বেশকিছু কমিটির সহযোগিতা মেলে না বলে জানা গিয়েছে। ফলে হাতেগোনা কয়েকজন বনকর্মী নিয়ে জঙ্গল রক্ষা বা হাতি সরানো যে সম্ভব নয় স্থানীয়দের সহযোগিতা ছাড়া, তা মানছেন বন দফতরের এক আধিকারিক। কেন সক্রিয় ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না ওই কমিটিগুলিতে? এই প্রশ্নে মেদিনীপুর বনবিভাগের কমিটির এক সদস্য বলেন, "আগের থেকে কাজ কমেছে। টাকাও সময়ে মেলে না। হাতির হানায় হওয়া ক্ষতির ক্ষতিপূরণ কবে যে মিলবে তার ঠিক নেই। মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে। পাশাপাশি আধিকারিক ও বনকর্মী কম থাকায় নিবিড় যোগাযোগ কমেছে স্থানীয়দের সঙ্গে। ফলে আগের মতো কাজে উৎসাহ পাচ্ছে না কেউই।"
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us