ভারতীয় মেয়েদের বিশ্বজয়! গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে কাঁদলেন রোহিত শর্মা

ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্তে আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন রোহিত শর্মা।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
rohit sharma and women cricket team

নিজস্ব সংবাদদাতা: ভারতের আকাশে আজ ইতিহাসের আলো। ৫২ বছরের প্রতীক্ষা, কত স্বপ্ন, কত কান্না… সব মিলিয়ে আজ উদ্ভাসিত বিজয়ের দিন। নবি মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে নারী ক্রিকেটের মহাকাব্য—ভারত জিতল মহিলা বিশ্বকাপ ২০২৫! দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে স্বপ্ন ছুঁল ভারতীয় তরুণী বাহিনী। আর সেই মুহূর্তেই টিভির ক্যামেরা ধরা দিল অন্যরকম ছবি—গ্যালারিতে বসে চোখ ভিজে উঠল রোহিত শর্মার। আকাশের দিকে তাকিয়ে যেন লিখে দিলেন—আজ ভারত সত্যিই মাথা উঁচু করে দাঁড়াল।

ম্যাচ শুরুতেই বৃষ্টির বাধা। তবুও সাহসী টস জিতে প্রথমে বোলিং নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর সেই পরীক্ষার মুহূর্তেই সামনে এলেন দুই যোদ্ধা—স্মৃতি মন্ধানা ও শেফালি বর্মা। দু’জন মিলে গড়লেন শতরানের জোট। স্মৃতি থামলেন ৪৫-এ, কিন্তু শেফালি? আগুন! ঝলসে দিলেন তরুণ প্রতিপক্ষ, সেই শিশুকাল থেকে লড়াই করে উঠে আসা মেয়েটি আজ খেললেন জীবনের সেরা ইনিংস—৮৭! মাত্র ৭৮ বলে, ৭টি চার, ২টি ছক্কা। ইতিহাসে নাম উঠল—বিশ্বকাপ ফাইনালে ৫০+ করা সবচেয়ে কমবয়সি ভারতীয়।

ROHIT SHARMA

মাঝের ওভারে যদিও চাপ বাড়ে। জেমাইমা, হারমনপ্রীত, অমনজ্যোত—কেউই বড় রান করতে পারেননি। কিন্তু তখনই পিঠ সোজা করে দাঁড়ালেন দুই দিদি—দীপতি শর্মা ও শিলিগুড়ির রিচা ঘোষ। দীপ্তির শান্ত, পরিণত ৫৮ রানের ইনিংস আর রিচার বিস্ফোরক ৩৪—ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিল। সংগ্রহ দাঁড়াল ২৯৮, বিশ্বকাপ ফাইনালের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর।

জয়ের লক্ষ্য সামনে রেখে মাঠে নামল প্রোটিয়ারা। ভাল শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু যে মেয়েটি ব্যাট হাতে আগুন জ্বেলেছেন, তিনি বল হাতে এনে দিলেন চমক—শেফালির ম্যাজিক! পরপর দুই উইকেট তুলে দক্ষিণ আফ্রিকার হৃদপিণ্ডে ঝাঁকুনি। তবু লরা উল্ফার্ট দাঁড়িয়ে লড়লেন—একটা বীরোচিত শতরান। কিন্তু অন্য প্রান্তে পতনের মিছিল।

শেষ দৃশ্যে সব আলো কাড়লেন উত্তরপ্রদেশের মেয়ে দীপ্তি শর্মা। পাঁচ উইকেট—৫/৩৯! আর চূড়ান্ত মুহূর্ত? তারই বল, হারমনপ্রীতের হাতে ক্যাচ। আর সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ! আনন্দের স্রোত! তেরঙ্গা আকাশে, কান্না, হাসি, উল্লাস—স্টেডিয়াম জুড়ে একটাই সুর—“চ্যাম্পিয়ন!”

রোহিতের চোখেও জল। তিনি জানেন—এই দিন আসতে কত বছর লেগেছে, কত সংগ্রাম, কত অঞ্জলি, কত রিচা, কত শেফালির গল্প জমে আছে। ভারত শুধু বিশ্বকাপ জেতেনি—এক প্রজন্মকে সাহস, লড়াই আর স্বপ্ন দেখার ভাষা শিখিয়েছে।

আজ এই দেশ মাথা উঁচু করে বলছে—“মেয়েরা পারবে। মেয়েরাই পারে। মেয়েরাই আজ ভারতের শক্তি।”