সালিশি সভা থেকে মৃত্যু মিছিল! মালদহে দুই তৃণমূল কর্মী খুনে ব্যাপক চাঞ্চল্য

মালদহের কালিয়াচকের রাজনগর গ্রামে সালিশি সভায় অশান্তির জেরে নিহত দু’জন তৃণমূল কর্মী। এখনও পর্যন্ত আটক ১৩ জন, চলছে পুলিশি তল্লাশি। উঠছে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
dead

নিজস্ব সংবাদদাতা: সালিশি সভা থেকে রক্তারক্তি, মালদহে মৃত বেড়ে হল দুই। বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হল বাদশা শেখের। তার আগেই একই ঘটনায় নৃশংসভাবে খুন করা হয় একরামুল শেখকে। দু’জনেই তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় সদস্য বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনায় এখনও থমথমে পরিস্থিতি মালদহ জুড়ে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে কালিয়াচক থানার অন্তর্গত রাজনগর গ্রামে। একটি ফসলি জমির উপর দিয়ে গাড়ি যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথমে বচসা শুরু হয়। সেই বচসা দ্রুত সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই গ্রামেই বৃহস্পতিবার সালিশি সভা বসানো হয়। কিন্তু সেই সভাতেই ফের নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় এবং মুহূর্তের মধ্যেই এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়।

arrested 123

অভিযোগ, সালিশি সভাতেই একরামুল শেখকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় গুরুতর জখম হন বাদশা শেখ-সহ আরও কয়েকজন। বাদশা শেখকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও বৃহস্পতিবার গভীর রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার পর এখনও পর্যন্ত ১৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজে শুরু হয়েছে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান। জেলা পুলিশের নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকায় চলছে নাকা চেকিং ও ধরপাকড়। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী।

এই জোড়া খুন ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক তরজা। শাসকদলের অভিযোগ, এলাকায় পরিকল্পিতভাবে অশান্তি ছড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধীদের দাবি, জেলার আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, গত কয়েক দিনের মধ্যেই মালদহে একের পর এক খুনের ঘটনায় জেলা জুড়ে আতঙ্ক বাড়ছে। তারই মাঝে বুধবার মালদহের পুলিশ সুপার Pradeep Yadav-কে বদলি করা হয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁকে উত্তর দিনাজপুর জেলা ট্র্যাফিক পুলিশের সুপার পদে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনিক মহলে এই বদলিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

একদিকে জোড়া খুন, অন্যদিকে পুলিশ সুপারের বদলি—সব মিলিয়ে মালদহের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নতুন করে বড় প্রশ্ন উঠে গেল।