শ্যামল বসুর মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা! SIR আতঙ্কেই হৃদ্‌রোগে মৃত্যু, দাবি তৃণমূলের

বিজেপি কি বলছে?

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
1974062-sir

নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: বাম আমলের সন্ত্রাসের জেরে একদা ঘরছাড়া হতে হয়েছিল তাঁকে। ফলে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ওঠেনি শ্যামল বসুর। আর সেই ভোটার লিস্টের বিভ্রান্তি ও সদ্য শুরু হওয়া এসআইআর–এর চাপই তাঁর মৃত্যুর কারণ— এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার গভীর রাতে ৬৭ বছর বয়সি এই তৃণমূল কর্মীর হৃদ্‌রোগে মৃত্যুর পর মেদিনীপুর-কেশপুর জুড়ে রাজনৈতিক তরজা চড়ছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যামল বসুর আদি বাড়ি কেশপুর ব্লকের শোলিডিহায়। সিপিএম আমলের অত্যাচার থেকে বাঁচতে তিনি বহু বছর ধরে মেদিনীপুর শহর লাগোয়া আবাসে থাকতেন। শান্ত স্বভাবের এই ব্যক্তি বয়সজনিত কারণে সক্রিয় রাজনীতি থেকে একটু দূরে থাকলেও এসআইআর শুরু হতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বলে দাবি পরিবারের। তাদের বক্তব্য, ১৯৯৫ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম ছিল, কিন্তু ২০২২ সালের তালিকায় নেই। এই নিয়েই দিবারাত্রি চিন্তায় ছিলেন তিনি। বহুবার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার কটাক্ষ, “বিজেপি বারবার মানুষের মধ্যে ভয় ছড়াচ্ছে। এসআইআরের আতঙ্কে বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শ্যামলবাবুও ভোটার লিস্টে নাম না থাকায় গভীর উদ্বেগে ছিলেন"। কেশপুরের তৃণমূল নেতা মহম্মদ রফিক বলেন, “সিপিএমের অত্যাচারে ঘরছাড়া হয়েছিলেন। আর বিজেপির অত্যাচারে প্রাণ গেল। লজ্জাজনক ঘটনা"।

শ্যামল বসুর ছেলে সনৎ বসুর কথায়, “বাবা এসআইআর নিয়ে খুব টেনশনে ছিলেন। ২০০২ সালের তালিকায় নাম ছিল না তাঁর। কী হবে বুঝতে পারছিলেন না"। প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ৪০ লক্ষ ভোটার। তাদের প্রায় শতভাগের কাছে এসআইআরের ফর্ম বিলি করা হয়েছে। ৮০ শতাংশের বেশি ফর্মের ডিজিটাইজেশনও সম্পন্ন হয়েছে।

এই ঘটনার পর এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তৃণমূল বিধায়ক দীনেন রায়। তিনি জানান, “অনেক বয়স্ক বাসিন্দাই আতঙ্কে ভুগছেন। বিষয়টি নিয়ে মানুষকে আশ্বস্ত করা জরুরি"।

তৃণমূলের অভিযোগকে “রাজনৈতিক নাটক” বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। জেলার সহ–সভাপতি শঙ্কর গুছাইত বলেন, “যে কোনও মৃত্যু দুঃখজনক। কিন্তু তৃণমূল ইচ্ছে করেই এসআইআর–কে কেন্দ্র করে ভয়ের আবহ তৈরি করছে। এসআইআর চালু হওয়ায় ভুতুড়ে ভোটার আর থাকবে না তাই তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ছে"। শ্যামল বসুর মৃত্যুকে ঘিরে দুই শিবিরের তীব্র বাক-যুদ্ধ চলছে।

WhatsApp Image 2025-11-27 at 6.53.55 PM