ট্রেন ধরতে দৌড়, সিঁড়িতে পদপিষ্ট বহু! আতঙ্কে কাঁপল বর্ধমান স্টেশন

বর্ধমান স্টেশনে চাঞ্চল্য! ট্রেন ধরতে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট বহু যাত্রী, ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
breaking new 2


নিজস্ব সংবাদদাতা: রবিবার সন্ধ্যায় রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয় পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান রেলস্টেশনে। ট্রেন ধরার তাড়া, প্ল্যাটফর্মে ভিড়, আর সেই ভিড়ের চাপেই ঘটে বিপত্তি। সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে হুড়োহুড়ির মধ্যে পদপিষ্ট হয়ে আহত হন অন্তত ১০ জন যাত্রী। তাঁদের তড়িঘড়ি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রবিবার সন্ধ্যায় একই সময়ে বর্ধমান স্টেশনে পৌঁছে যায় তিনটি ট্রেন। ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বর্ধমান-হাওড়া লোকাল, ৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে রামপুরহাট লোকাল এবং ৭ নম্বরে আসানসোল লোকাল। ট্রেন ধরার জন্য যাত্রীরা একযোগে দৌড়তে শুরু করেন। প্ল্যাটফর্ম বদলাতে গিয়ে যাত্রীদের মধ্যে শুরু হয় ব্যাপক ঠেলাঠেলি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ি ছিল খুবই সরু, আর এত ভিড় সামলানোর মতো জায়গা ছিল না। হঠাৎ করে একাধিক যাত্রী পিছলে পড়ে গেলে বাকিরা তাদের গায়ে পড়ে যান, যার ফলে হুড়োহুড়ি মুহূর্তের মধ্যেই মারণ দুর্ঘটনায় পরিণত হয়।

প্রথমে ট্রেনের যাত্রীরা ও উপস্থিত মানুষজন আহতদের উদ্ধার করে খবর দেন রেল পুলিশকে। পরে আরপিএফ ও জিআরপি পৌঁছায় ঘটনাস্থলে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর ছিল, তবে বর্তমানে তাঁরা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। ঘটনাটি ঘটার পরই সারা স্টেশনে ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক।

burdwan stampede

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠছে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এই স্টেশন দিয়ে আসা-যাওয়া করেন, কিন্তু সিঁড়িগুলি তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ এবং পর্যাপ্ত পুলিশ বা রেলওয়ে সিকিউরিটির অভাব থাকায় যাত্রীদের ক্ষোভ তীব্র হচ্ছে। অনেকে বলছেন, আগে থেকেই ট্রেনের সময়ের সমন্বয় করলে এমন ঘটনা এড়ানো যেত।

রেল প্রশাসন পরিস্থিতির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একই সময়ে একাধিক ট্রেন ধরে রাখতে গিয়ে যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়, কিন্তু ভবিষ্যতে এমন অব্যবস্থার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে।

ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস। আহত যাত্রীদের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি তিনি তীব্র ভাষায় রেল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ, “বর্ধমানের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে এই অব্যবস্থা মেনে নেওয়া যায় না। পর্যাপ্ত গার্ড না থাকায় বিপদ আরও বেড়েছে। রেলের উচিত, এখনই ব্যবস্থা নেওয়া।”

রবিবারের এই আতঙ্কঘন ঘটনায় ট্রেন যাত্রার নিরাপত্তা নিয়ে ফের উঠল প্রশ্ন — সাধারণ যাত্রীদের জীবন কি রেলের কাছে এতটাই সস্তা?