/anm-bengali/media/media_files/2025/09/15/whatsapp-image-2025-09-15-2025-09-15-15-46-57.jpeg)
হরি ঘোষ, পশ্চিম বর্ধমান: ঘন জঙ্গল আর প্রাচীন গড়ের নীরবতা ভেদ করে যখন অষ্টমীর সন্ধিক্ষণে হঠাৎ শোনা যায় কামানের গর্জন, মনে হয় শতাব্দী পেরিয়ে ফিরে এল সেই 'রক্তগরম' যুগ। পশ্চিম বর্ধমানের লোহাগুড়ি গ্রামের দুর্গাপুজোর এই প্রাচীন আয়োজন যেন সময়ের সেতুবন্ধন, যা প্রত্যেক বছর হাজার মানুষকে টেনে আনে।
কথিত আছে, বহু শতাব্দী আগে এই গড় ও জঙ্গল ঘেরা জনপদ ছিল লোহার কারিগরদের আস্তানা। এখানেই লৌহ আকরিক গলিয়ে তৈরি হতো তলোয়ার, বর্শা, বল্লব থেকে শুরু করে কামান যা সামন্তযুগের যে কোনো রাজ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র। এই সমস্ত অস্ত্র যেত সামন্ত রাজা ইছাই ঘোষের দরবারে। সেই ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করেই গ্রামের নামের মধ্যেই রয়ে গেছে লোহার ছাপ ‘লোহাগুড়ি’। কালের স্রোতে থেমে গেছে যুদ্ধের হুঙ্কার, নিভে গেছে অস্ত্র গলানোর ভাঁটা। তবুও রয়ে গেছে সেই উত্তরাধিকার। আজও লোহাগুড়ির সরকার বাড়ির দুর্গাপুজো সেই অতীতকে বাঁচিয়ে রেখেছে। প্রাচীন খাঁড়া ও কামান এখনও দাঁড়িয়ে আছে যুগের নিঃশব্দ সাক্ষী হয়ে। প্রতিবছর অষ্টমীর সন্ধিক্ষণে ঐতিহ্য মেনে সেই কামান দাগা হয়। মুহূর্তের জন্য গর্জে ওঠা সেই আওয়াজে যেন শোনা যায় ইছাই ঘোষের রাজত্বের গৌরবগাঁথা, যুদ্ধের উত্তাপ আর লোহার আঘাতের ধ্বনি। এটা শুধু দুর্গাপুজোর আচার নয়, বরং ইতিহাস, আবেগ আর ঐতিহ্যের এক অনন্য মেলবন্ধন। জগবন্ধু সরকার বলেন, "আমাদের এই পুজো শুধু উৎসব নয়, বরং লোহাগুড়ির ঐতিহ্য, ইতিহাস আর গর্বের সংরক্ষণ। এই কামানের গর্জনে যেন আমাদের পূর্বপুরুষদের সংগ্রাম আর সাহসের ছাপ শোনা যায়। তাই প্রতিবছর আমরা প্রাচীন নিয়ম মেনে চলি যাতে নতুন প্রজন্মও বুঝতে পারে সেই সময়ের ইতিহাস"।
/filters:format(webp)/anm-bengali/media/media_files/2025/09/15/whatsapp-image-2025-09-15-2025-09-15-15-47-57.jpeg)
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us