নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর : বিকাশ ভবনে আন্দোলনরত চাকরি হারানো শিক্ষকদের উপর পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ পশ্চিম মেদিনীপুরে। মেদিনীপুর শহরে মিছিল করে বিক্ষোভ দেখাল এসইউসিআই ও ছাত্র-যুব সংগঠন। একই রূপ বেলদাতে। বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ওই সংগঠন। এবার তারা ডাক দিয়েছে ছাত্র ধর্মঘটের।
বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনে চাকরিহারা শিক্ষকদের বিক্ষোভে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। গেট ভেঙে বিকাশ ভবন চত্বরে ঢুকে পড়েন আন্দোলনকারীরা। তখনও আটকে বিকাশ ভবনের অন্যান্য কর্মচারীরা। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওই কর্মচারীদের অফিস থেকে বের করতে আন্দোলনকারী চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের লাঠি চালায় পুলিশ। তাতে শিক্ষকদের অনেকেই আহত হয়েছেন। শিক্ষিকাদের পোষাক ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ওই ঘটনাকে ধিক্কার জানিয়ে রাজ্যজুড়ে ছাত্র সংগঠন AIDSO এবং যুব সংগঠন AIDYO র পক্ষ থেকে প্রতিবাদ দিবস পালিত হয় শুক্রবার। মেদিনীপুর শহরে রবীন্দ্রনাথের মূর্তির পাদদেশ থেকে বিদ্যাসাগর মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল হয়। উপস্থিত ছিলেন ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সিদ্ধার্থ শংকর ঘাটা এবং যুব সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য শীর্ষেন্দু বিকাশ শাসমল। সিদ্ধার্থ বলেন, "শান্তিপূর্ণ গণ-আন্দোলনে পুলিশি হস্তক্ষেপকে নিন্দা জানাই। আমরা দাবি করছি, অবিলম্বে যোগ্য শিক্ষকদের সসম্মানে স্কুলে ফেরাতে হবে। সরকারি শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে"। সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচাতে আগামী ১৯ মে AIDSO সারা বাংলা ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এসইউসিআই দলের পক্ষ থেকেও বিক্ষোভ মিছিল হয় জেলা শাসক দফতরে। উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদক নারায়ণ অধিকারী।
পাশাপাশি বেলদাতে প্রতিবাদ মিছিল ও সভা হয়। কেশিয়াড়ি মোড় থেকে মিছিল বেলদা পরিক্রমা করে ট্রাফিক মোড়ে এসে পৌঁছয়। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন এসইউসিআই দলের জেলা কমিটির সদস্য শ্যামাপদ জানা, স্বদেশ পড়িয়া, ব্রতীন দাস, বংশী মন্ডল, প্রতাপ পণ্ডা প্রমুখ। শিক্ষকদের এই ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে শিক্ষা ও শিক্ষকের অধিকার রক্ষার দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান বক্তারা। শ্যামাপদ জানা বলেন, "সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে শিক্ষার বেসরকারিকরণের উদ্দেশ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার তালিকা বিকাশ ভবন থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী সহ সরকারি নেতা-মন্ত্রীদের কাছেই রয়েছে। যাদের কাছ থেকে তারা টাকা নিয়েছেন বিনিময়ে চাকরি দিয়েছেন, যাদেরকে সুপ্রিম কোর্ট সুদ সহ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে মেধা সম্পন্ন বাকি যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সসম্মানে পুনর্বহাল করে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা রক্ষার দাবি জানাচ্ছি আমরা। সেই সঙ্গে সরকারের নেতা, মন্ত্রী, আমলা যারা টাকা নিয়েছেন তাদের কঠোর শাস্তির দাবি রাখছি"।
/anm-bengali/media/post_attachments/admin/resources/news/banner/1747298348_Photo_-_2025-05-15T140903.900-344368.webp)