প্রদীপ করের মৃত্যুতে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে, সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব বিজেপি

প্রদীপ করের মতো সাধারণ মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
breaking new 1

নিজস্ব সংবাদদাতা: আগরপাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ করের আত্মহত্যা এখন রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে। পরিবারের অভিযোগ, NRC আতঙ্কে নিজের জীবন শেষ করেন তিনি। বুধবার সকালেই তাঁর বাড়িতে পৌঁছান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তিনি সোজাসুজি নিশানা করেন নির্বাচন কমিশন ও মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (CEO) দফতরকে। তাঁর অভিযোগ, “কমিশনের অব্যবস্থা ও বিভ্রান্তিকর নোটিশই মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে”।

অভিষেকের কথায়, “আমি বাংলার মানুষকে বলতে চাই — ভয় পাবেন না। আমি রাস্তায় আছি, বাংলার প্রতিটি ভোটারের পাশে আছি”। তিনি আরও দাবি করেন, SIR-এর নামে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিজেপি, এবং সেই আতঙ্কের জেরেই প্রদীপ করের মতো সাধারণ মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।

তৃণমূল যেখানে এই ঘটনার দায় বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের উপর চাপাচ্ছে, সেখানে বিজেপি পাল্টা দাবি তুলেছে সিবিআই তদন্তের। পানিহাটির বিজেপি নেতা চণ্ডীচরণ রায় বলেন, “তৃণমূল সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে অপ্রচার চালাচ্ছে। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় প্রদীপ করের নাম ছিল। তাহলে NRC আতঙ্কে আত্মহত্যার প্রশ্নই ওঠে না। ওঁকে কি কেউ প্ররোচিত করেছে?”

CBI1.jpg

তিনি আরও জানান, “আমরা চাই নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। হাইকোর্টের বিচারপতির তত্ত্বাবধানে বা সিবিআইয়ের মাধ্যমে তদন্ত করা হোক। পুলিশ প্রদীপ করের হাতের লেখা যাচাই করুক, কারণ শুনেছি তাঁর ডান হাতের আঙুল ছিল না”।

আসলে, আত্মহত্যার নোট নিয়েই জোরদার বিতর্ক। পুলিশের দাবি, নোটে লেখা ছিল - “আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী”। কিন্তু পরিবারের দাবি, প্রদীপ করের ডান হাতের চারটি আঙুল ৮০’র দশকের এক দুর্ঘটনায় কেটে গিয়েছিল। ফলে তিনি হাতে লিখতে পারতেন কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর ভগ্নিপতি উত্তর হাজরা।

সব মিলিয়ে, প্রদীপ করের মৃত্যু এখন শুধু একটি মর্মান্তিক ঘটনা নয়, বরং রাজ্য রাজনীতির উত্তপ্ত ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। একদিকে তৃণমূল NRC আতঙ্ক ও কমিশনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে সরব, অন্যদিকে বিজেপি চাইছে সিবিআইয়ের নিরপেক্ষ তদন্ত। তদন্তের রিপোর্ট কী বলে, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী।