বাংলার বাড়ি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত নাম, তবে নেই জায়গা- চরম বিপাক

বাংলার বাড়ি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত নাম, তবে নেই নির্দিষ্ট জায়গা- এখন কি হবে?

author-image
Aniket
আপডেট করা হয়েছে
New Update
x

নিজস্ব প্রতিনিধি: নেই নিজস্ব কোন জায়গা, তবে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত রয়েছেন এরকম ১১ জন। ৬ জনের ব্যাংকে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ঢুকলেও বাড়ি তৈরি করতে পারেনি অসহায় আদিবাসী পরিবারগুলি। দ্রুত সরকারি জায়গা পাওয়ার জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ পরিবারগুলি। কবে মিলবে অসহায় পরিবারগুলির সরকারি পাট্টার জায়গা, নির্দিষ্টভাবে সঠিক উত্তর নেই কারও কাছে। ব্যাংকে টাকা ঢুকলেও যাতে টাকা তুলতে না পারে উপভোক্তারা সেই জন্য  ব্যাংক খাতাগুলিকে প্রশাসনের তরফে হোল্ড করা হয়েছে।


পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের রসিয়াড়ী গ্রামের ঘটনা। জানা যাচ্ছে, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে রসিয়াড়ী গ্রামে বেশ কিছু আদিবাসী পরিবার বসবাস করেন। রসিয়াড়ী গ্রামে জঙ্গলের ধারে মাটির বাড়ি তৈরি করে বছরের পর বছর ধরে ছেলেমেয়েদের নিয়ে সংসার করছেন এই আদিবাসী পরিবারগুলি। 


রয়েছে তাদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রয়েছে তাদের মাটির বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ। শুধু নেই নিজস্ব জায়গা ও তার বৈধ কাগজ, এই পরিবারগুলি দীর্ঘদিন ধরে বনদপ্তরের জায়গায় বসবাস করে আসছেন বলে জানা গিয়েছে। আর এতেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় রাজ্য সরকারের বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ১১ জনের তালিকায় নাম উঠেছে, ইতিমধ্যে ৬ জনের ব্যাংকে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ক্রেডিট হয়েছে। তারপরেই বাড়ি তৈরিতে দেখা দিয়েছে যত গণ্ডগোল। কারণ এই পরিবারগুলোর নেই নিজস্ব কোন জায়গা। তাদের এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে মেলেনি কোন পাট্টার জায়গা।তারা এতদিন ধরে যে জায়গায় বসবাস করে আসছে সেই জায়গা বন দপ্তরের, নেই কোন ফরেস্ট পাট্টা। তাই সরকারিভাবে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা ব্যাংকে ঢুকলেও বাড়ি করতে পারছে না পরিবারগুলি। 


অসহায় পরিবারগুলির প্রশাসনের কাছে কাতর আবেদন দ্রুত প্রশাসনের তরফ থেকে যাতে তাদের জায়গা দেওয়া হয় এবং যাতে এই আদিবাসী পরিবারগুলি সরকারি আবাস যোজনার প্রকল্পের টাকায় বাড়ি করতে পারে। স্থানীয় শাসকদলের নেতা থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েত মানছেন এই পরিবারগুলোর অসহায়তার কথা। তবে এবিষয়ে ব্লকের বিডিও ও মহকুমাশাসক দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, বন দপ্তরের জায়গায় আদিবাসী ১১ টি পরিবার বসবাস করে জেনেও তাদের নাম বাংলার বাড়ি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত হল কি করে? বন দপ্তরের জায়গায় বসবাস করা সত্বেও এই পরিবারগুলিকে অন্যত্র পাট্টার জায়গা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়নিই বা কেনো? বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা পেয়েও বন দপ্তরের জায়গায় কি আদেও বাড়ি করতে পারবে আদিবাসী পরিবারগুলি? 


বন দপ্তরের জায়গায় সরকারি বাড়ি তৈরির বৈধতা নেই। আদিবাসী পরিবারের মাথায় সরকারি পাকা বাড়ির ছাদ দিতে গিয়ে বিপাকে স্থানীয় প্রশাসন। সমস্যা সমাধানে গ্রাম পঞ্চায়েত,ব্লক প্রশাসন থেকে মহকুমা প্রশাসন ও ভূমি দপ্তরকে সাথে নিয়ে বন দপ্তরের সাথে একাধিক বার বৈঠক আলোচনায় বসলেও এখনও অধরা সমাধান। ফরেস্ট পাট্টা আদেও কি পাবে পরিবারগুলি? পেলেও তা কবে? সরকারি টাকা পড়ে ব্যাংকে, পাকা বাড়ি তৈরির জন্য প্রশাসনের মুখ চেয়ে চন্দ্রকোনার রসিয়াড়ি গ্রামের এই অসহায় আদিবাসী পরিবারগুলি।