উত্তরে দুর্যোগের সংকেত! দুধিয়া ব্রিজ ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা

সাইক্লোন মন্থার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টি, বীরভূম-মুর্শিদাবাদে হলুদ সতর্কতা। উত্তরবঙ্গে লাল সতর্কতা, সিকিমে তুষারপাত শুরু। ভারী বৃষ্টি, ধস ও হড়পা বানের আশঙ্কা।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
landslide

নিজস্ব সংবাদদাতা: ঘূর্ণিঝড় মন্থার তাণ্ডবের পরেও এখনও থামেনি আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা। অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ুতে ধ্বংসলীলা চালানোর পর তার পরোক্ষ প্রভাব এখন বাংলা জুড়ে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি নেমেছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, নিম্নচাপের জেরে আজও দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে।

আজ বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। কলকাতায় আকাশ মেঘলা থাকবে, হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শহরে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে প্রায় ৩১ ডিগ্রি, সর্বনিম্ন ২৫ ডিগ্রি। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ থাকবে খুবই বেশি—সর্বোচ্চ প্রায় ৯৮ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।

Rain

এদিকে, উত্তরবঙ্গে পরিস্থিতি আরও চিন্তার। মন্থার টানা প্রভাবে নিম্নচাপ সক্রিয় হয়ে তীব্র বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। উত্তর দিনাজপুর ও কোচবিহারে রয়েছে কমলা সতর্কতা। সিকিমেও কমলা সতর্কতা জারি।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু এলাকায় একদিনেই ২০০ মিমি-র বেশি বৃষ্টি হতে পারে। পাহাড়ে ধস নামার সম্ভাবনা এবং নদীপাড়ে হড়পা বানের ভয় বাড়ছে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসন নদী সংলগ্ন এলাকায় মাইকিং শুরু করেছে। দুধিয়ায় অস্থায়ী সেতু নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে—বালাসন নদীর জলে সেতু ভেসে যাওয়ার আশঙ্কায় উদ্বেগ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে।

সিকিম ও ভুটানের জলে উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে স্তর বাড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ধান কাটার মরসুমে উত্তরবঙ্গেও কৃষকদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে—পাকা ধান নষ্ট হওয়ার ভয় প্রকট।

তবে যারা পাহাড়ের পর্যটন পরিকল্পনা করেছেন, তাদের জন্য একটু স্বস্তির খবর রয়েছে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে সিকিমের অনেক জায়গাতেই তুষারপাত শুরু হয়েছে। নাথুলা ও পার্শ্ববর্তী উঁচু অঞ্চলে বরফ পড়ছে, ফলে পর্যটকদের উৎসাহ বাড়ছে।

তবে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের বাকি অংশে এখনই রাতের তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেও ঠান্ডা পড়ার আভাস খুব একটা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

আকাশে মেঘ, বাতাসে আর্দ্রতা আর হঠাৎ বৃষ্টির গর্জন—মন্থার ছায়া যেন এখনও পুরোদমে রয়ে গেছে বাংলার আকাশে।