আদিবাসীদের জমি চুরি? লোধা-শবরদের জমি কীভাবে পৌঁছল কারখানার মালিকদের কাছে!

ঝাড়গ্রামের মোহনপুরে লোধা-শবরদের বরাদ্দ জমি কীভাবে গেল স্পঞ্জ আয়রন কারখানার হাতে? জমি দখল-ব্যবসার বিরুদ্ধে নেমে পড়ল প্রশাসন।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
WhatsApp Image 2025-08-01 at 2.28.16 PM

নিজস্ব সংবাদদাতা: ঝাড়গ্রাম জেলার মোহনপুর ব্লকে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই চাপা উত্তেজনা চলছিল। এবার সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। জানা গিয়েছে, যেসব জমি আদিবাসী লোধা-শবর পরিবারগুলির উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার, সেই জমিগুলি অবৈধভাবে দখল করে বিক্রি করে দেওয়া হয় এলাকার একাধিক স্পঞ্জ আয়রন কারখানার কাছে।

এই জমিগুলির উৎস ছিল বিশিষ্ট ব্যক্তি যোগেন মাহাতর থেকে কেনা রাজ্য সরকারের জমি, যা পরে প্রকল্পের মাধ্যমে লোধা-শবর পরিবারগুলির মধ্যে বিলি করা হয়। দলিলপত্র হাতে পাওয়ার পরেও জমির মালিকানা হারানোর আশঙ্কায় ক্ষোভ ও অসহায়তার মধ্যে ছিলেন বহু আদিবাসী পরিবার। অথচ হঠাৎ দেখা যায়, সেই জমিরই দলিল বদলে গিয়ে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নামে হয়ে যাচ্ছে!

tribal jhargram

এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় আমাদের প্রতিবেদনের পরই দ্রুত তৎপর হয় জেলা প্রশাসন। সরাসরি মোহনপুরে যান স্থানীয় BLRO কল্লোল বিশ্বাস। নিজে উপস্থিত থেকে জমি সংক্রান্ত যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখেন তিনি। জমির প্রকৃত অবস্থান, বর্তমান ব্যবহার ও দলিলপত্র পরীক্ষা করে তিনি জমিগুলোর আসল মালিকানা যাচাইয়ে উদ্যোগ নেন। কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্ত লোধা-শবর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও।

জমির অবৈধ দখল নিয়ে এই তদন্তের ফলে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন স্থানীয় আদিবাসী পরিবারগুলি। তাঁদের আশা, এইবার হয়তো এতদিনের লড়াইয়ের পর তাঁরা নিজেদের জমির উপর অধিকার ফিরে পাবেন। প্রশাসনের এই সক্রিয়তাকে স্বাগত জানিয়ে অনেকেই বলছেন—জমির কাগজ হাতে থাকলেও যদি কারখানা গড়ে ওঠে, তা হলে দলিলের মূল্য কোথায়?