শিল্পীর নিখুঁত তুলির টানে জীবন্ত রূপ লাভ করছে মাটির প্রতিমা

মাকে রূপদান করতে ব্যস্ত এই শিল্পী।

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
WhatsApp Image 2025-10-20 at 3.54.58 PM

হরি ঘোষ, জামুড়িয়া: আজ কালীপুজো। ইতিমধ্যেই মণ্ডপে মণ্ডপে পৌঁছে গিয়েছে কালী প্রতিমা। কোথাও বা চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। আবার কোথাও শিল্পী তার নিখুঁত তুলির টানে মায়ের চক্ষুদান করছে। 

সেরকমই এক চিত্র উঠে এলো আমাদের ক্যামেরায়। জামুড়িয়া বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত শ্যামলা অঞ্চলের ফরফরি গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত কর্মকার দীর্ঘ প্রায় ৭ থেকে ৮ বছর ধরে বিভিন্ন দেবদেবীর মাটির ও সিমেন্টের প্রতিমা তৈরি করে আসছেন। শিল্পীর বয়স ২২-২৩ এর কাছাকাছি। এই বয়সে তার হাতে তৈরি প্রতিমা দেখলে চমকে যাবেন আপনিও। পশ্চিম বর্ধমান ছাড়া বীরভূম জেলাতেও পাড়ি দেয় তার তৈরি বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি। বছরের বিভিন্ন সময় মূর্তি গড়ার কাজেই ব্যস্ত থাকেন রঞ্জিত। এবছর প্রায় ৪০ থেকে ৪২টি কালী প্রতিমা তৈরি করেছেন নিজ হাতে যেগুলি পৌঁছে যাবে এলাকার বিভিন্ন পুজো মণ্ডপগুলিতে। এখন দিনরাত পরিশ্রম করে একা হাতে প্রতিমায় রং করা, চক্ষুদান, এমনকি বসন পরানো সমস্তটাই করতে হচ্ছে। 

এ বিষয়ে আমরা রঞ্জিত কর্মকারের সাথে কথা বলেছিলাম। তিনি জানান যে দীর্ঘ ৭ থেকে ৮ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করছেন। বলেন, "একটা সময় নেশা হিসেবে আমি প্রতিমা তৈরীর কাজ করতাম, কিন্তু বর্তমানে এই নেশাকে আমি আমার পেশায় পরিণত করেছি"। রঞ্জিতের কথায়, কোনওরকম কোনও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তার নেই। গ্রামে দুর্গাপুজোর আগে শিল্পীরা মায়ের প্রতিমা তৈরি করতে এলে তিনি সে বসে আপন মনে তাদের কাজ দেখতেন। অন্যদিকে ফাঁকা সময় পেলে এলাকার কোনও কুমোরটুলিতে চলে যেতেন প্রতিমা তৈরীর কাজ শিখতে। এছাড়াও তার এক মামা মূর্তি তৈরি করেন যার কাছে দীর্ঘ সময় কাজ শিখেছেন। 

বর্তমানে রঞ্জিতের তৈরি বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি এলাকা ছাড়িয়ে পাড়ি দেয় ভিন জেলাতেও। অবশেষে কাতর সুরে জানান যে খুব গরিব পরিবারের সন্তান তিনি। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় বাড়িতে। এদিকে প্রতিমা তৈরি করি জায়গা সেরকম না থাকায় সামান্য ঝড় বা বৃষ্টি হলে খুবই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। 

তবে স্বাভাবিকভাবেই এত কিছু বাধার পরেও প্রতিমা শিল্পী রঞ্জিতের নিখুঁত তুলির টানে একের পর এক মাটির প্রতিমা জীবন্ত রূপ লাভ করছে।

WhatsApp Image 2025-10-20 at 3.57.14 PM