/anm-bengali/media/media_files/2025/05/03/XgfewQhfHLHOwXF2gc8l.jpeg)
নিজস্ব প্রতিনিধি: পৃথক পৃথক বিষয়ে ছিল না কোনো গৃহশিক্ষক। একটি কোচিং সেন্টারেই সমস্ত বিষয় পড়তো অন্যান্যদের সঙ্গে। তবে তার প্রতি আলাদা নজর ছিল বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের। এক সময় বাড়িতে সংসার চলবে কি করে তা ভেবে ঘুম উড়ে গিয়েছিল পরিবারের। মেয়ের পড়াশোনাও হয়তো অন্ধকারে তলিয়ে যাবে। সব কিছু সামলে নিজের জেদে এবার মাধ্যমিকে সফল সুপ্রীতি সামন্ত।
সুপ্রীতি শালবনী নিচুমঞ্জরি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। মাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৩০। পরিবারে আর্থিক অনটনের মধ্যেও তার এই সাফল্যে অনেকটাই খুশি বাবা-মা। বাবা সুজিত সামন্ত-র শালবনীতে ফুটপাথে একটি ফাস্টফুডের দোকান রয়েছে। বহু পুরোনো একটি বাড়িতে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে তার দিনযাপন। ওই দোকান থেকেই সংসার চলে তার। সুপ্রীতি দশম শ্রেণীতে ওঠার পর হঠাৎ সুজিত বাবুর স্ট্রোক হয়। দীর্ঘ ৬ মাস অসুস্থতার মধ্য দিয়ে দিন কাটে। সংসারে একপ্রকার খাবার জোটাতে হিমশিম অবস্থা। ভেঙে পড়েছিল সুপ্রীতিও। বিষয়টি জানার পর তার প্রতি আলাদা নজর দিতে শুরু করেন প্রধান শিক্ষিকা সহ অন্যান্য শিক্ষিকারা। প্রধান শিক্ষিকা বাসবি ভাওয়াল বলেন, "পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চাতেও সুপ্রীতি নজর কেড়েছিল বিদ্যালয়ের। ওর বাবার স্ট্রোক হয়ে যাওয়ার পর ও ভেঙে পড়েছিল। কিভাবে পড়াশোনা করবে বা তার খরচ কিভাবে জোগাড় হবে তা নিয়ে মনমরা হয়ে থাকত। আমরা যতটা পেরেছি তাকে মানসিকভাবে সাহায্য জুগিয়েছে। খুবই অভাব অনটনের সংসার তাদের।"
সুপ্রীতি বাংলায় ৮০, ইংরেজি ৯০, গণিতে ৯৫, ভৌত বিজ্ঞানে ৯১, জীবন বিজ্ঞানে ৯০, ইতিহাসে ৯০, ভূগোলে ৯৪ নম্বর পেয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছে তার। কিন্তু খরচ জোগাবে কিভাবে? বাবা সুজিত সামন্ত বলেন, "যা রোজগার হয় তাতে কোনরকমে সংসার চলে। স্ট্রোকের পথ থেকে আমার চিকিৎসা খরচ বেড়ে গিয়েছে। ভেবে পাচ্ছি না কিভাবে মেয়েকে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করে পড়াশোনা চালাবো।" সুপ্রীতির ইচ্ছা ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু পড়াশোনার খরচ জোগাবে কে?
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us