/anm-bengali/media/media_files/2025/10/20/whatsapp-image-2025-10-20-2025-10-20-12-46-23.jpeg)
হরি ঘোষ, লাউদোহা : দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের লাউদোহা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ঝাঁঝরা গ্রামে মা ডাঙ্গালে কালীর আবির্ভাব নিয়ে রয়েছে নানান অলৌকিক কাহিনী। কথিত আছে আজ থেকে প্রায় ৫০১ বছর আগে অধুনা ধবনী গ্রামের নীলকন্ঠ মুখোপাধ্যায় নামক এক সাধু ও সংগীতশিল্পী প্রথম মা ডাঙ্গালে কালীর দর্শন করেন। জনশ্রুতি আছে এই নীলকন্ঠ মুখোপাধ্যায় নাকি স্বয়ং পরমহংস শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেবকে গান শোনাতেন। স্বয়ং রামকৃষ্ণ দেব মা সারদা ও স্বামী বিবেকানন্দকে সঙ্গে নিয়ে মা ডাঙ্গালে কালীর রূপ দর্শন করার জন্য এই স্থানে নাকি আসেন।
পরবর্তীতে ঝাঁজরা গ্রামের তিন সজ্জন সাধু পুরুষ ব্যক্তি মলিন্দ্র চক্রবর্তী, ব্রজেন্দ্র চক্রবর্তী ও সুরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী মা ডাঙ্গালে কালীর প্রতিষ্ঠা ও পুজোর প্রচলন করেন। ঝাঁজরা গ্রামের এই চক্রবর্তী পরিবারের আসল পদবি ছিল গাঙ্গুলি। বর্ধমান রাজার দেওয়া চক্রবর্তী উপাধি পাওয়ার পর তারা চক্রবর্তী উপাধিতেই ভূষিত হন। সেই সময় মায়ের কোনওরকম মন্দির ছিল না। একটা গাছের তলায় হতো পুজো, যা আজও বিদ্যমান। মায়ের মন্দিরের অদুরেই রয়েছে একটা গড় যেখানে কোনদিনও জল শেষ হয় না। সেই প্রাচীনকাল থেকেই ওই গড় থেকেই জল নিয়ে শুরু হয় মায়ের পুজো। আজও এলাকা এবং আশেপাশের মানুষ গড়ের জলকে পবিত্র বলে মনে করেন। জনশ্রুতি আছে মায়ের এই মন্দির প্রাঙ্গণ থেকেই উৎপত্তি হয়েছিল টুমনি নদীর যার চিহ্ন আজও বিদ্যমান। প্রত্যেক বছরের ন্যায় এ বছরও কালীপুজোর অমাবস্যা তিথিতে মহা ধুমধাম ও ভক্তির সঙ্গে হচ্ছে মায়ের পুজো। এলাকায় এবং আশেপাশের হাজার হাজার মানুষ এই মন্দির প্রাঙ্গণে ভিড় করেন।
চক্রবর্তী পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম তথা মন্দিরের সেবাইত গৌতম চক্রবর্তী জানান যে এই ডাঙ্গালে কালীর আদি বসতি স্থান ছিল ঝাড়খণ্ডের গড় শ্যামলী এলাকায়। সেখান থেকেই অলৌকিকভাবে ঝানেরা এলাকায় মায়ের আবির্ভাব হয় মাটি ফুঁড়ে। প্রথম প্রথম এখানে মা পরিচিত ছিলেন গড় শ্যামলী নামেই। যেহেতু ঝাঁজরা গ্রামের একেবারে শেষ প্রান্তে নির্জন জায়গায় মায়ের মন্দির তাই এলাকাবাসীরা এই মাকে ডাঙ্গালে কালী নামেই ডাকতে শুরু করেন। তারপর থেকেই এই মা ডাঙ্গালে কালী নামেই প্রসিদ্ধ। তিনি বলেন যে আজও প্রাচীন প্রথা মেনেই যেখানে মায়ের প্রথম আবির্ভাব হয়েছিল সেই গাছ তলায় পঞ্চমুন্ডির আসনেই শুরু হয় প্রথম মায়ের পুজো। তারপর পুজো হয় মন্দিরে মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তিতে।
এখানে মায়ের মন্দিরে ছাগ বলির প্রথা রয়েছে। মন্দির কমিটির তরফ থেকে পুজোর দিন হাজার হাজার মানুষকে খিচুড়ি ভোগ বিতরণ করা হয়। গতবার চার-পাঁচ হাজার ভক্তের সমাগম হয়েছিল। এবারে তার থেকেও বেশি হবে বলে আশা করছেন মন্দির কমিটির লোকেরা।
/filters:format(webp)/anm-bengali/media/media_files/2025/10/20/whatsapp-image-2025-10-20-2025-10-20-12-46-36.jpeg)
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us