পদ্মার পাড়ে বসে কবিতা লিখবেন! মুর্শিদাবাস ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ অধীর রঞ্জন চৌধুরীর

ধুলিয়ান ও সামশেরগঞ্জের আহতদের দেখতে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
adhir ranjanchaj.jpg


নিজস্ব সংবাদদাতা: ওয়াকফ ইস্যু ঘিরে উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদ। জেলায় হিংসাত্মক ঘটনার বলি হয়েছেন তিনজন, আহত বহু। এই অশান্ত পরিস্থিতির মধ্যে মঙ্গলবার ধুলিয়ান ও সামশেরগঞ্জের আহতদের দেখতে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান বহরমপুরের সাংসদ ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

আহতদের দেখে বাইরে বেরিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন অধীর। অভিযোগ করেন, "সরকার ও প্রশাসন প্রকৃত তথ্য আড়াল করছে। সামশেরগঞ্জের ঘটনায় এক শিশুর কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। বয়স মাত্র ১১–১২ বছর। সে বসতে, শুতে বা দাঁড়াতেই পারছে না—শুধু কাঁদছে। অন্য দুই কিশোরও গুলিবিদ্ধ। একজনের শরীর থেকে গুলি বের হলেও, অন্যজনেরটি এখনও শরীরে। একজন আবার বলেছে, মায়ের ওষুধ আনতে গিয়েছিল দোকানে।"

এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, “মুর্শিদাবাদকে এখন দেশের লোক আফগানিস্তান ভাবছে! মুখ্যমন্ত্রী কবিতা লিখতে পদ্মার ধারে যেতে পারেন, হাথরাস-মণিপুরে প্রতিনিধি দল পাঠাতে পারেন, কিন্তু জঙ্গিপুরে আসতে লজ্জা কিসের? গাড়িভাড়া নেই? নাকি এখানকার মানুষের দুর্দশা আপনার কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে না?”

অধীরের এই মন্তব্যের পাল্টা দেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সময় পেলে অবশ্যই আসবেন। এর আগেও তিনি বারবার আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কাশ্মীরে নিহত জঙ্গিপুরের শ্রমিকদের পরিবারের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছিলেন। হেলিকপ্টারে ববি হাকিমকে পাঠিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও মানে হয় না।”

Mamata Banerjee

তিনি আরও জানান, “মুখ্যমন্ত্রী আসুন বা না আসুন, আমি ওঁর কাছে আবেদন রাখছি—এই ঘটনায় নিহত তিন পরিবারের যেন আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হয়।”


ওয়াকফ সংশোধিত আইনকে ঘিরে রাজ্যে যে অশান্তির আগুন ছড়িয়েছে, তার আঁচ লাগছে সরাসরি মানুষের জীবনে। ঘটনায় রাজনৈতিক তরজার পাশাপাশি দাবি উঠছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর, এবং স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ তদন্তের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে গুজব রুখতে।

সবমিলিয়ে, মুর্শিদাবাদ জুড়ে চাপা উত্তেজনার মাঝে চলছে রাজনৈতিক দোষারোপ ও মানবিক উদ্বেগের টানাপোড়েন।