শালবীজ দিয়ে রূপচর্চার সামগ্রী, আদিবাসীদের হাত ধরে দেশের প্রথম পাইলট প্রোজেক্ট শুরু দুর্গাপুরে

নতুন ধরণের ব্যবসা।

author-image
Anusmita Bhattacharya
New Update
Screenshot 2025-11-19 194113

হরি ঘোষ, দুর্গাপুর: জঙ্গলে দিনের পর দিন পড়ে থাকা শালবীজ বদলে দেবে আদিবাসীদের ভাগ্য। কেমিক্যালে ভরা বাজারের কসমেটিকের বিকল্প হিসেবে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক বাটার ও স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট তৈরির লক্ষ্যে দেশের প্রথম পাইলট প্রোজেক্ট শুরু করল দুর্গাপুর সেন্ট্রাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (CMERI)। এই প্রকল্পে শালবীজ সংগ্রহ, বীজ থেকে বাটার নিষ্কাশন, এবং কাঁচামাল প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্ব থাকছে স্থানীয় কাঁকসার জঙ্গলমহলের মলানদিঘীর আদিবাসী সম্প্রদায়ের হাতে। 

এলাকায় রয়েছে লক্ষ, লক্ষ শাল গাছ। গবেষকরা বলছেন, “শালবীজের বাটার আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন। যদি এই মডেল সফল হয়, তাহলে আদিবাসী সমাজে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং ভারত প্রথমবারের মতো শালবীজ নির্ভর কসমেটিক শিল্পে জায়গা করে নেবে"।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শালবীজের বাটারে থাকে হাইড্রেটিং ফ্যাট। কোনও সিনথেটিক কেমিক্যাল নেই, ত্বকের জন্য অ্যালার্জিমুক্ত ও পরিবেশবান্ধব। প্রকল্প সফল হলে ভবিষ্যতে শালবীজ বডি লোশন, লিপ বাম, হেয়ার ক্রিম সহ বহু স্কিন কেয়ার পণ্য বাজারে আসতে পারে। বুধিরাম কিঙ্কু  বলেন,"যে জিনিসটা আমরা আগে ফেলে দিতাম, আজ সেটাই আমাদের আয় দেবে। এটা আমাদের জীবন পাল্টে দিতে পারে।আমাদের সাথে বিশেষজ্ঞরা কথা বলেছেন। এলাকাতে মাঝে মধ্যে আসেন। আমাদেরকেও গবেষণা করে ডাকেন। তাড়াতাড়ি এই প্রকল্প শুরু হলে আমরা উপকৃত হব।" কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের ডাইরেক্টর নরেশ চন্দ্র মুর্মু বলেন,"আমরা এই প্রকল্প পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে শুরু করেছিলাম। প্রথম পর্যায়ে শেষ হয়েছে। উৎসাহিত রয়েছে আদিবাসীরা। আমরা আফ্রিকার একটি দেশে এই দেখেছিলাম পরিবেশবান্ধব এক ধরনের বীজ দিয়ে রূপচর্চার কসমেটিক বানানো হচ্ছে। সেই দেখেই আমরা উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম। এবার আমরা পড়ে থাকা শালবীজ থেকে রূপচর্চার কসমেটিক তৈরি করার গবেষণা চালাচ্ছি। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার মানুষদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পাইলট প্রজেক্ট শেষ হয়েছে। শাল বীজ থেকে বাটার তৈরির যন্ত্রাংশ দেওয়া হবে তাদের। নিজেরাই তৈরি করে বড় বড় রূপচর্চার কসমেটিক কোম্পানির হাতে তুলে দিতে পারব। আন্তর্জাতিক বহু রূপচর্চার কোম্পানি কসমেটিক তৈরির জন্য প্রাকৃতিক সামগ্রীর ওপর জোর দিচ্ছে। তাদের হাতে শাল বীজের বাটার এবং তেল তুলে দিতে পারবে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার মানুষ।অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় আত্মনির্ভরভাবে এগিয়ে যাবে তাঁরা"।

Screenshot 2025-11-19 194156