এসআইআর শুরু হতেই নীরবতার ঢাল! কেন মুখ খুলছেন না হাকিমপুরের বাংলাদেশিরা?

উত্তর ২৪ পরগনার হাকিমপুর সীমান্তে বাংলাদেশে ফেরার অপেক্ষায় ২০০–রও বেশি মানুষ। এসআইআর শুরু হওয়ার পর চোরাপথে পালাতে গিয়ে বহু বাংলাদেশি ধরা পড়ছেন। সীমান্তে চলছে পুশব্যাক প্রক্রিয়া।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
bangladeshi aa

নিজস্ব সংবাদদাতা: উত্তর ২৪ পরগনার হাকিমপুর সীমান্তে দিনভর একই দৃশ্য—পরিবার-পরিজনকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার আশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় শতাধিক মানুষ। সীমান্তে দাঁড়ানো মানুষের চোখে উদ্বেগ, মুখে অদ্ভুত নীরবতা। সংবাদমাধ্যম এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করতেই কেউ মুখ ঘুরিয়ে নিলেন, কেউ দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে রইলেন নির্বাক, কেউ আবার মাথা নিচু করে বসে থাকলেন—একটিও শব্দ তাঁদের মুখ থেকে বেরোল না।

শুক্রবার সকালে হাকিমপুর সীমান্তে পৌঁছতেই দেখা গেল অন্তত ২০০-রও বেশি মানুষ সারি বেঁধে বসে আছেন। তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ভারতে কোথায় থাকতেন? বাংলাদেশে কোন জেলার বাড়ি? কিন্তু প্রশ্ন শুনে যেন সবাই একই নির্দেশে চুপ মেরে গেলেন। কোনও উত্তর নেই, চোখে-মুখে কোনও অভিব্যক্তি নেই—এ যেন পরিকল্পিত নীরবতা।

রাজ্যে এসআইআর শুরু হওয়ার পর থেকেই চোরাপথে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে বহু বাংলাদেশি ধরা পড়ছেন। অভিযোগ, তাঁরা অবৈধ পথে ভারতে ঢুকেছিলেন। বিজেপি বারবার দাবি করছে, এসআইআর শুরু হতেই অনুপ্রবেশকারীরা দল বেঁধে বাংলা ছাড়ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে এমন বহু ভিডিওও।

BSF

গত কয়েকদিন ধরে হাকিমপুর সীমান্তে চলছে ‘পুশব্যাক’ প্রক্রিয়া। অনেককেই গতকাল ফেরত পাঠানোর কথা ছিল। সেই সময় টিভি ৯ বাংলার সাংবাদিক সীমান্তে খবর সংগ্রহ করতে গেলে তাঁকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। দেশে ফেরা নিয়ে এমন উত্তেজনার মাঝেই আজ আবারও সীমান্তে জমে উঠেছে অপেক্ষারত মানুষের ভিড়। সংখ্যাটা এখনও ২০০–র বেশি এবং আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।

কিন্তু আজকে কেউ সাংবাদিককে হুঁশিয়ারি দেননি। বরং এমন এক নীরবতা দেখা গেল, যা আরও সন্দেহ বাড়াচ্ছে। কেউই বলতে চাইছেন না, তাঁরা কীভাবে ভারতে ঢুকেছিলেন, কোথায় ছিলেন, এখন কেন ফিরে যেতে চাইছেন। তাঁদের এই চোখে–মুখে তালা দেওয়া নীরবতা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে—কারও নির্দেশেই কি তাঁরা মুখ বন্ধ রাখছেন? নাকি অন্য কোনও ভয় কাজ করছে?

হাকিমপুর সীমান্তের বাতাস আজ অদ্ভুত ভারী। চোখে হাজার প্রশ্ন, কিন্তু মুখে স্তব্ধ নীরবতা।