২৪ ঘণ্টায় উধাও ১৭০০ বুথ! ভোটার সংশোধনের পরিসংখ্যান ঘিরে তুমুল রহস্য

বাংলায় SIR ভোটার তালিকা সংশোধনে বড় গরমিল। ২৪ ঘণ্টায় ২২০৮ বুথের হিসাব নেমে এল ৪৮০-তে। নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট ঘিরে তীব্র বিতর্ক।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
SIR

নিজস্ব সংবাদদাতা:  পশ্চিমবঙ্গে চলতি বিশেষ নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধন বা SIR প্রক্রিয়া ঘিরে বড় গরমিল সামনে এসেছে। জেলা নির্বাচন আধিকারিকদের প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, রাজ্যের ২২০৮টি বুথে কোনও মৃত, নিখোঁজ, স্থানান্তরিত বা একই ভোটারের একাধিক নাম নেই। সেই সব বুথে দেওয়া সব গণনা ফর্মও জমা পড়ে গিয়েছিল বলে জানানো হয়।

এর পর সোমবার জেলার কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চায় নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার সেই সংশোধিত রিপোর্ট পৌঁছতেই চমকে যান সবাই। দেখা যায়, ওই ধরনের বুথের সংখ্যা হঠাৎ কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪৮০-এ। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় এত বড় পরিবর্তন কীভাবে সম্ভব, তা নিয়েই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন বুথের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। রায়দিঘিতে ৬৬টি, কুলপিতে ৫৮টি, মগরাহাটে ১৫টি এবং পাথরপ্রতিমায় ২০টি বুথে এই ছবি ধরা পড়েছে। প্রশাসনের একাংশের দাবি, তথ্য লাগাতার আপডেট হওয়ায় এই পরিবর্তন হয়েছে। তবে এই ব্যাখ্যা ঘিরেও প্রশ্ন উঠছে।

1974062-sir

এই বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা Sukanta Majumdar। তিনি বলেন, এক দিন আগে রিপোর্টে বলা হয়েছিল ২২০০-র বেশি বুথে কোনও পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু জেলা থেকে রিপোর্ট চাইতেই তা নেমে এল ৪৮০-তে। তাঁর কটাক্ষ, এমন ‘ম্যাজিক’ শুধু বাংলাতেই সম্ভব।

এদিকে ভোটার যাচাই নিয়েও একাধিক সমস্যা চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন। যাঁদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল না, তাঁদের নতুন করে যাচাই করা হচ্ছে বাবা-মা বা দাদা-দিদার নথির মাধ্যমে। যেসব বুথে যাচাই না হওয়া ভোটারের সংখ্যা বেশি, সেখানে নতুন করে পর্যবেক্ষক পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মোট ৪৬ লক্ষ ২০ হাজার গণনা ফর্ম জমা পড়েছে। তার মধ্যে মৃত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন ২২ লক্ষ ২৮ হাজার ভোটার, নিখোঁজ ৬ লক্ষ ৪১ হাজার, স্থানান্তরিত ১৬ লক্ষ ২২ হাজার এবং একই ব্যক্তির একাধিক নাম রয়েছে ১ লক্ষ ৫ হাজারের ক্ষেত্রে। মৃত ভোটারের হার সবচেয়ে বেশি উত্তর কলকাতায়, প্রায় ৬.৯১ শতাংশ। দক্ষিণ কলকাতায় তা ৬.০৬ শতাংশ, উত্তর ২৪ পরগনায় ৩.৪৭ শতাংশ, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩.২৫ শতাংশ এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ২ শতাংশ।

ভোটার তালিকা সংশোধনের এই হঠাৎ বদলে যাওয়া পরিসংখ্যান ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।