/anm-bengali/media/media_files/w3TWoc1eghkEUwqYfmv7.jpg)
নিজস্ব সংবাদদাতা: আবারও রক্তাক্ত নভেম্বর, আবারও আতঙ্কে কাঁপল কসবা। গভীর রাতে আচমকাই গুলির শব্দে চাঞ্চল্য ছড়াল বোসপুকুর প্রান্তিক পল্লীতে। রাত প্রায় ১১টা নাগাদ হঠাৎই গুলির আওয়াজ শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন স্থানীয়রা। দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক যুবক। বাঁ হাতের তালু ভেদ করে বেরিয়ে গিয়েছে গুলি। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় রুবি জেনারেল হাসপাতাল-এ। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন আহত যুবক। চিকিৎসকদের মতে, তাঁর শারীরিক অবস্থা এই মুহূর্তে স্থিতিশীল হলেও আতঙ্ক কাটেনি পরিবারের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় ওই যুবক কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে এলাকায় একটি পরিত্যক্ত জায়গায় বসে খাওয়া-দাওয়া করছিলেন। সেখানেই আচমকাই গুলি চলে। কে বা কারা গুলি চালাল, কেনই বা এই ঘটনা ঘটল—এই প্রশ্নগুলির উত্তর এখনও অন্ধকারে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি গুলির খোল উদ্ধার করেছে। পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে খাবারের প্যাকেট, থালা ও মদের বোতল। সব দেখে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সেখানে একাধিক যুবকের জমায়েত ছিল। ঘটনার সময় যুবকের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই রহস্যের জট খুলতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
এই ঘটনা ফের মনে করিয়ে দিল গত বছরের ভয়াবহ স্মৃতি। ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর, এই এলাকাতেই অ্যাক্রোপলিস মল-এর কাছাকাছি কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর গুলি চালানোর চেষ্টা হয়। দুষ্কৃতী বন্দুক তাক করলেও শেষ মুহূর্তে গুলি বেরোয়নি। সেই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা এলাকা। তদন্তে উঠে এসেছিল একের পর এক অপরাধমূলক ঘটনার জাল। তবুও দুষ্কৃতীদের দাপট যে থামেনি, এ দিনের গুলির ঘটনা যেন ফের সেই কথাই সামনে আনল।
শুধু কসবা নয়, আতঙ্ক ছড়িয়েছে লাগোয়া আনন্দপুর এলাকাতেও। গত কয়েক মাসে সেখানে একাধিক গুণ্ডাগিরির অভিযোগ উঠেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গুলশন কলোনিতে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপিতে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল গোটা এলাকা। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দুষ্কৃতীরা প্রকাশ্য রাস্তায় ঘোরাফেরা করেছিল, অটো স্ট্যান্ড মোড়ে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দিয়েছিল সাধারণ মানুষকে। ইএম বাইপাস থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বেই এমন তাণ্ডব দেখে কার্যত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা।
একের পর এক গুলি, দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব, রক্তাক্ত যুবক—সব মিলিয়ে ফের বড় প্রশ্নের মুখে কলকাতা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, তবে কি আবার ফিরছে সেই অশান্তির দিনগুলো? পুলিশের তরফে আশ্বাস দেওয়া হলেও রাতের শহরে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ যে ক্রমশ বাড়ছে, তা স্পষ্ট।
/anm-bengali/media/agency_attachments/IpyOoxt2orL626OA8Tlc.png)
Follow Us