“বাংলা বললেই বাংলাদেশি?”—বিস্ফোরক প্রশ্ন মমতার, নিশানায় বিজেপি ও ইলেকশন কমিশন

কলকাতায় ভোটার তালিকা সংশোধন SIR-এর বিরুদ্ধে বিরাট মিছিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির দাবির পাল্টা প্রশ্ন তুললেন, বিহারে কত রোহিঙ্গা ধরা পড়েছে?

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
mamata banerjee a

নিজস্ব সংবাদদাতা:   পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার কলকাতায় বিশাল মিছিলের নেতৃত্ব দিলেন। লক্ষ্য—চলমান ভোটার তালিকার বিশেষ ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। তাঁর অভিযোগ, এই প্রক্রিয়াকে হাতিয়ার করে বাংলার মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। মমতার দাবি, কেন্দ্র ও নির্বাচন কমিশন “নীরব কারচুপি” চালাচ্ছে, আর এই অভিযানের আড়ালে গোপনে নাম বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।

বিজেপি বলছে, SIR-এর মাধ্যমে রাজ্যে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। সেই দাবির জবাবে মমতা সরাসরি পাল্টা প্রশ্ন তুললেন বিহারকে লক্ষ্য করে। তিনি বলেন, “বিহারে যেখানে ভোটার লিস্ট সংশোধন হল, সেখানে কত রোহিঙ্গাকে ধরতে পারল? কতজনের নাম বাদ দিল নির্বাচন কমিশন?” তাঁর অভিযোগ, বিজেপি অকারণে বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি করছে।

মমতা বলেন, বাংলায় বাংলা ভাষায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ তকমা লাগানো হচ্ছে। অথচ হিন্দি বা পাঞ্জাবি বললেই কাউকে ‘পাকিস্তানি’ বলা হয় না। তিনি তীব্র ভাষায় বলেন, “ওরা স্বাধীনতা সংগ্রামে ছিল কোথায়? যারা যুদ্ধ করেনি, তারাই আজ দেশপ্রেমের ভাষা শিখাচ্ছে!” তাঁর বক্তব্যে অনিশ্চয়তায় থাকা শ্রমজীবী মানুষের উদ্বেগও উঠে এল। বহু অসংগঠিত খাতের শ্রমিক নাকি ভাবছেন, এই প্রক্রিয়ায় তাঁদের নাম বাদ পড়বে কি না।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও প্রশ্ন তোলেন—যখন কেন্দ্রের আধার কার্ডকে সর্বত্র পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তখন ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে কেন আধারকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না? তাঁর দাবি, আধারের দোহাই দেওয়া হয় সরকার যেদিকে সুবিধা মনে করে, আর অন্যদিকে নাগরিকদের অধিকার খর্ব করা হয়।

এই মিছিলে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন এবং রাজপথ জুড়ে শোনা গেল একটাই দাবি— “ভোটাধিকার আমাদের অধিকার, কেড়ে নেওয়া চলবে না।” মমতার বার্তা স্পষ্ট—বাংলাকে ভয় দেখিয়ে দমানো যাবে না, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় রাজ্য লড়বে।