এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর নেপথ্যে এত বড় নেটওয়ার্ক! বিধাননগর কাণ্ডে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে

বিধাননগরের দত্তাবাদে স্বর্ণ ব্যবসায়ী অপহরণ ও খুনের ঘটনায় নীলবাতির ফরচুনা গাড়ি বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ। ধরা পড়েছে BDO-র গাড়ির চালক, উত্তরবঙ্গের ঠিকাদার ও তৃণমূল নেতা। তদন্তে উঠে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
dead

নিজস্ব সংবাদদাতা:  বিধাননগরের দত্তাবাদে স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যা অপহরণ এবং খুনের মামলায় নয়া উত্তেজনা ছড়াল। তদন্তে নেমে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ একটি নীলবাতি লাগানো ফরচুনা গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে, যা পুরো ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ফরচুনাতেই প্রথমে স্বপনকে অপহরণ করা হয়, পরে খুনের পর দেহ পাচারের চেষ্টা করা হয়েছিল। নীলবাতি লাগানো সরকারি ব্যবহারের গাড়ি যে এমন ভয়ংকর অপরাধে ব্যবহার হয়েছে, তা সামনে আসতেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজগঞ্জের BDO-র কলকাতার গাড়ির চালক রাজু ঢালি, উত্তরবঙ্গের পরিচিত ঠিকাদার ও BDO-র ঘনিষ্ঠ তুফান থাপা এবং কোচবিহার ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সজল সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করতে করতেই পুলিশের হাতে আসে সেই নীলবাতির ফরচুনা গাড়ির খোঁজ। তদন্তকারীরা মনে করছেন, তিনজনের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে ভাগ করা ছিল অপহরণ, খুন এবং দেহ পাচারের দায়িত্ব। গাড়িটির ব্যবহারের প্যাটার্ন পরীক্ষা করতেই একে একে সামনে আসে ঘটনাচক্র।

dead body 3.jpg

তদন্তে উঠে এসেছে, স্বপন কামিল্যাকে দত্তাবাদ থেকে টার্গেট করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িটি VIP-পাসধারী হওয়ায় রাতের অন্ধকারে কাউকে সন্দেহ হয়নি। এরপরই ঘটে হত্যাকাণ্ড। কীভাবে এবং কোথায় খুন করা হয়েছিল, তা নিয়ে পুলিশ এখনও মুখ খোলেনি। তবে ফরচুনার ভেতর পাওয়া চিহ্ন ও প্রাথমিক ফরেনসিক রিপোর্ট থেকে পরিষ্কার, গাড়িটিই ছিল পুরো অপরাধের প্রধান ‘মুভিং স্পট’।

এই ঘটনায় হাওড়া, বিধাননগর ও উত্তরবঙ্গ মিলিয়ে বিস্তৃত তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের ধারণা, শুধু অপহরণ বা খুন নয়, স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে টার্গেট করার পেছনে আরও বড় কোনও উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে। ধৃতদের নেপথ্য সম্পর্ক, রাজনৈতিক যোগাযোগ, সরকারি গাড়ি ব্যবহারের বিশেষ সুবিধা—সবটাই এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দত্তাবাদের ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমাজ বলছে, অপরাধীরা যদি নীলবাতির গাড়ি ব্যবহার করে খুন করতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, খুব শিগগিরই এই চক্রের আরও নাম সামনে আসবে।

পুরো ঘটনাই এখন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তদন্তের কেন্দ্রে, আর প্রতিটি নতুন তথ্যই জটিলতার সঙ্গে আরও প্রশ্ন বাড়িয়ে দিচ্ছে।