বেতন না পেয়ে কাজ বন্ধ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের! অচল হয়ে পড়ল আমেরিকার বিমান ব্যবস্থা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ বিমান বিপর্যয়! সরকারি অচলাবস্থার জেরে ১২০০-রও বেশি ফ্লাইট বাতিল। বেতনহীন অবস্থায় কাজ করা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের বিক্ষোভে অচল আকাশপথ। আটকে হাজার হাজার যাত্রী, তীব্র ক্ষোভ ছড়াল বিমানবন্দরে।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
us flight


নিজস্ব সংবাদদাতা: ওয়াশিংটন থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস—পুরো আকাশপথ যেন হঠাৎ থেমে গেল শুক্রবার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে ১২০০-রও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়ে গেল সরকারি অচলাবস্থার জেরে। যাত্রীদের ক্ষোভ, বিশৃঙ্খলা আর আতঙ্কের ছবি ধরা পড়ল বিমানবন্দরগুলিতে।

দেশজুড়ে ৪০টি বড় বিমানবন্দর কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে—আটলান্টা, ডেনভার, নিউয়ার্ক, শিকাগো, হিউস্টন, লস অ্যাঞ্জেলেস—সব জায়গায় একই ছবি। যাত্রীরা লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। অনেকের যাত্রা শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায়, কারও আবার বিমান ধরার আশাই ফুরিয়ে গেছে।

ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) জানিয়েছে, সরকারি তহবিল বন্ধ থাকায় বহু এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার বেতন পাচ্ছেন না। সেই কারণে শুক্রবার একাধিক কন্ট্রোলার অসুস্থতার অজুহাতে ছুটি নেন। ফলস্বরূপ, প্রশাসন বাধ্য হয়ে আকাশপথে উড়ানের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রথমে ৪ শতাংশ ফ্লাইট কমানো হলেও, পরিস্থিতি না সামলালে আগামী সপ্তাহে তা বেড়ে ১০ শতাংশে পৌঁছতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আমেরিকান এয়ারলাইনস জানিয়েছে, শুধু শুক্রবারই তারা ২২০টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। ডেল্টা ১৭০টি, সাউথওয়েস্ট ১০০টিরও বেশি উড়ান স্থগিত করেছে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ‘ফ্লাইটঅ্যাওয়ার’-এর তথ্য অনুযায়ী, হাজার হাজার উড়ান বিলম্বিত হয়েছে, বিশেষ করে বোস্টন, শিকাগো ও’হেয়ার, আটলান্টা ও রিগ্যান ন্যাশনাল বিমানবন্দরে গড়ে এক ঘণ্টারও বেশি দেরি হয়েছে প্রতিটি ফ্লাইটে।

যদিও আন্তর্জাতিক উড়ানগুলি তুলনামূলকভাবে কম প্রভাবিত হয়েছে, তবুও ঘরোয়া উড়ানগুলিতে ভোগান্তির অন্ত নেই। যাত্রীদের কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “আমাদের মনে হচ্ছে আমরা বন্দি হয়ে পড়েছি সরকারের দোষে।”

সরকারি অচলাবস্থা (shutdown) ঘিরে যখন কংগ্রেসে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চরমে, তখন তার সরাসরি আঘাত এখন সাধারণ মানুষ ও বিমান পরিষেবার ওপর। প্রশাসনের এক কর্মকর্তা সতর্ক করে জানিয়েছেন—“যদি আগামী সপ্তাহে কংগ্রেস তহবিল না ছাড়ে, তবে দেশের আকাশপথ সম্পূর্ণ অচল হয়ে যেতে পারে।”

সব মিলিয়ে, মার্কিন আকাশ এখন রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ঘূর্ণিপাকে আটকে। প্রশ্ন একটাই—সরকারি সংকটের দায় কে নেবে, এবং কবে আবার স্বাভাবিক হবে দেশের বিমান পরিষেবা?