ট্রাম্পের নতুন নীতি দেখে খুশি রাশিয়া! শীতল যুদ্ধের পর প্রথমবার মার্কিন কৌশলকে এমন সমর্থন

ট্রাম্পের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা নীতি রাশিয়ার প্রশংসা কুড়োল। শীতল যুদ্ধের পর প্রথমবার মার্কিন কৌশলকে এমন সমর্থন দিল মস্কো। ন্যাটো, ইউক্রেন ও ইন্দো-প্যাসিফিক প্রসঙ্গেও বড় বার্তা।

author-image
Tamalika Chakraborty
New Update
donald trump

নিজস্ব সংবাদদাতা:  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা নীতিকে স্বাগত জানাল রাশিয়া। মস্কো বলেছে, ট্রাম্পের এই কৌশলগত নথি বহু দিক থেকেই ক্রেমলিনের ভাবনার সঙ্গে মিলে যায়। শীতল যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এত খোলাখুলি ভাবে মার্কিন কৌশলকে সমর্থন জানানো—এ প্রথম।

ট্রাম্পের নতুন নীতি ‘ফ্লেক্সিবল রিয়ালিজম’-এর কথা বলছে এবং মনরো ডকট্রিন পুনরুজ্জীবিত করার ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে পশ্চিম গোলার্ধকে মার্কিন প্রভাব বলয় হিসেবে দেখা হয়। নথিতে ইউরোপের ‘সভ্যতাগত মুছে যাওয়ার’ আশঙ্কা, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা এবং রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার কথাও বলা হয়েছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রুশ রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেছেন, “নথির সংশোধনগুলো আমাদের ভাবনার সঙ্গে বহু ক্ষেত্রে মিলছে।” তিনি আরও বলেন, ন্যাটোকে ‘চিরদিন বিস্তৃত হতে থাকা সামরিক জোট’ হিসেবে তুলে ধরার ধারণা শেষ করার ইঙ্গিত তাঁরা আশাব্যঞ্জক হিসেবেই দেখছেন।

Putin

তবে পেসকভ সতর্ক করে বলেন, মার্কিন “ডিপ স্টেট” ট্রাম্পের মতো ভাবছে না। তাঁর বক্তব্য, ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন যে কিছু প্রভাবশালী স্থায়ী মুখ আমেরিকার প্রচলিত নীতির বিরুদ্ধে কথা বললে নেতাদের বাধা দেন।

২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল এবং ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের পর মার্কিন কৌশলগত নথিগুলো রাশিয়াকে সবসময় হুমকি হিসেবেই তুলে ধরেছিল। এবার নথিতে রাশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত স্থিতিশীলতার সহযোগিতার কথা বলা রাশিয়ার কাছে স্বস্তিদায়ক বলে মন্তব্য করেন পেসকভ।

ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্রাটেজিতে বলা হয়েছে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল এখন অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার কেন্দ্র। যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা তাই তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য সংঘাত ঠেকাতে সামরিক সক্ষমতা বাড়াবে। এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করেছে।

ট্রাম্প এ বছরের মার্চে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “ইতিহাস বলে, রাশিয়া আর চিন একসঙ্গে হলে সেটা কারও জন্যই ভালো নয়।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার এত ঘনিষ্ঠ অবস্থান সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিরল। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর দু’দেশ কিছুদিন পরমাণু অস্ত্র হস্তান্তরে একসঙ্গে কাজ করেছিল। ৯/১১-র পরও সামান্য সময়ের জন্য দুই দেশ সহযোগিতা করেছিল। কিন্তু ন্যাটোর সম্প্রসারণ, ইউরোপের রাজনীতি এবং পুতিনের ক্ষমতায় আসা—সবকিছু মিলিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আবার দূরত্বে ঠেকেছিল।